নোয়াখালীতে ৩ দিনে আক্রান্ত দ্বিগুণ, চৌমুহনীতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা চেয়ে চিঠি
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/noakhali_10.jpg?itok=5Ae7sUgN×tamp=1590228891)
নোয়াখালীতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই ২০-২২ জনের করোনা শনাক্ত হচ্ছে। গত ৯ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৮ জন। গত বুধবার (১৩ মে) থেকে শুক্রবার (১৫ মে) এই ৩ দিনে নতুন করে আরও ৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১৯ জন। নতুন এ আক্রান্তের সংখ্যা আগের ৩৪ দিনের আক্রান্তের দ্বিগুণেরও বেশি।
জেলায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ হয়েছে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় চৌমুহনীতে জরুরি অবস্থা জারি করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস জানান, চৌমুহনীতে দ্রুতগতিতে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখানে জরুরি অবস্থা জারি করা অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চৌমুহনীতে ১৪৪ ধারা জারি করা না হলে ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুতেই রোধ করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, চৌমুহনী বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র হওয়ায় ব্যবসার পাশাপাশি এখানে ঘনবসতিও বেশি। ৯টি উপজেলা ও প্রতিবেশী জেলা ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থেকে বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন হাজারো লোকজন এখানে আসেন।
ডা. অশীম কুমার বলেন, ‘চৌমুহনী শহরে জরুরী অবস্থা জারি করার অনুরোধ জানিয়ে গত মঙ্গলবার (১২ মে) বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিত আবেদন করেছি।’
বেগমগঞ্জের ইউএনও মাহবুব আলম, আবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নোয়াখালীর মধ্যে করোনা পরিস্থিতি বেগমগঞ্জে সবচেয়ে বেশি খারাপ। দিন দিন পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার লিখিত আবেদনপত্রটি তিনি নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।
নোয়াখালী সিভিল সার্জন ও জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. মোমিনুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণে জেলার হটস্পট বেগমগঞ্জের চৌমুহনী বাজার। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। করোনা নিয়ে জেলার ৯টি উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে বেগমগঞ্জে ৬১, সদরে ১৬, চাটখিলে ১১, কবিরহাটে ১২, হাতিয়ায় ৫, সোনাইমুড়ীতে ১১, সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জে ১ জন করে আছেন।
জেলা প্রশাসক ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তন্ময় দাস বলেন , জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বর্তমানে লাগামহীন। গত ৩ দিনে নোয়াখালীতে ৬১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। যাদের সবাই বেগমগঞ্জের।
তিনি জানান, এখনই জরুরি অবস্থা জারি করার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। যে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতেও কাজ না হলে পরবর্তীতে জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
Comments