হাসি ফুটল ৫৩৭ চা শ্রমিকের মুখে
ধারাবাহিক দীর্ঘ আন্দোলনের পর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কালিটি চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের বকেয়া মজুরিসহ সব ধরনের বকেয়া ভাতা হাতে পেয়েছেন। ১৩ সপ্তাহের মজুরি পেয়ে ভীষণ অর্থাভাবে থাকা এই ৫৩৭ শ্রমিকের মুখে ফুটেছে হাসি।
বকেয়া মজুরির দাবিতে এই চা বাগানের শ্রমিকরা কয়েক দফায় ভূখা বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের আন্দোলন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরীন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন করেন।
উপজেলা প্রশাসন ও বাগানের শ্রমিকরা জানান, কালিটি বাগানের ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সিলেটের ‘জোবেদা টি কম্পানি’। বাগানের ৫৩৭ জন শ্রমিক কাজ করেও ১৩ সপ্তাহ ধরে মজুরি পাচ্ছিলেন না। মজুরির দাবিতে তারা কয়েক দফা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করন। এরমধ্যে গত ১৫ এপ্রিল বকেয়া মজুরির দাবিতে বাগানে ভূখা বিক্ষোভ মিছিল করে তারা।
চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক উত্তম কালোয়ার বলেন, ‘শ্রমিকদের আন্দোলন সফল হয়েছে। সবাই ১৩ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পেয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে নগদ মজুরি পেয়ে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট। এজন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সহযোদ্ধাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’
চা বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দেব বলেন, ‘শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া শুরু হয়েছে। কালিটি চা-বাগানের ৫৩৭ জন চা শ্রমিকের নগদ মজুরি ও বকেয়া বোনাস দেওয়া শুরু হয়েছিল, তা গতকাল সম্পন্ন হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় বৈঠক করে সমাধানের পথ বের করা হয়। ১৩ সপ্তাহের মজুরিসহ ২০১৫ সাল থেকে বকেয়া বিভিন্ন ভাতাসহ ‘নগদ প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা বর্তমান ও পুরনো মিলিয়ে ৮৯৭ জন চা শ্রমিককে দেওয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান বলেন, ‘প্রশাসন সবসময় কালিটি চা বাগানের শ্রমিকদের পাশে ছিল, এখনো আছে। বাগানের সমস্যা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর মালিকপক্ষকে কঠোর চাপপ্রয়োগ করায় একটা সন্তোষজনক সমাধান বের হয়েছে।’
এ ছাড়াও, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের ইতোমধ্যে কয়েক দফায় ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ২০০ শ্রমিককে এককালীন ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
Comments