ইউরোপে ‘ভাগ করো, শাসন করো’ নীতির সুবিধা নিতে চায় চীন

‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে “ভাগ করো, শাসন করো” নীতির মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারে চীন’— এমনটাই জানিয়েছেন ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল। তার মতে, চীন ইইউ’র ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতাকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার কর‍তে পারে।
প্রতীকী ছবি। (সংগৃহীত)

‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে “ভাগ করো, শাসন করো” নীতির মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারে চীন’— এমনটাই জানিয়েছেন ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল। তার মতে, চীন ইইউ’র ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতাকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার কর‍তে পারে।

গত ১৪ মে একাধিক ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ইইউ-চীন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পূর্বশর্ত হলো— ইইউ’র সদস্য রাষ্ট্রগুলো মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সমর্থন।

চীনা বার্তাসংস্থা সিনহুয়া জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেছেন। আলাপকালে শি বলেন, ‘চীন মহামারি নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। কোভিড-১৯ ঠেকাতে সব দেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীন।’

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, উহান শহরে প্রথম সংক্রমিত হওয়া নতুন করোনাভাইরাসের কারণে হারানো আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে বেইজিং।

১৪ মে শি’র সঙ্গে ফোনে আলাপকালে ইইউ’র সদস্যরাষ্ট্র হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ইইউ’র সহায়তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি।

শি’কে অরবান বলেছেন, ‘হাঙ্গেরি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী। চীন এবং কেন্দ্রীয় ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর কাঠামোকে সমর্থন দিতে ও অংশীদার হতে প্রস্তুত হাঙ্গেরি।’

নেতৃত্ব নিয়ে নিজ দেশে সমালোচনার শিকার হলেও মহামারি মোকাবিলায় চীনের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছেন অরবান।

এর আগে মহামারি সংকট নিয়ে বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে আলাপ করেছেন চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং। ফ্রান্সের ইম্যানুয়েল মাঁখো ও জার্মানির অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের মতো নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বললেও ইইউ’র কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেনি চীন।

ইউরোপীয় জনগণের কাছে চীনের প্রোপাগান্ডামূলক প্রচারণার সমালোচনা করেছে ইইউ।

বোরেল বলেন, ‘কূটনীতির মাধ্যমে চীন ইইউ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্যের সুযোগ নিতে পারে। কারণ, ইইউ’র সব দেশের সঙ্গে মিত্রতা তৈরি করে যৌথ পরাশক্তি গড়ে তোলা সহজ নয়। প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি ও সংবেদনশীলতা আছে। আর চীনের বিরুদ্ধে এমন দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের উদাহরণ পাওয়া যায়।’

বিবৃতিতে সব সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি সম্মিলিত শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান বোরেল।

তিনি বলেন, ‘ইউরোপের সম্মিলিত শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের ইউরোপীয়দের ওপরেই নির্ভর করেছে। আমাদের মধ্যে ঐক্য থাকা জরুরি। তাহলে কোনো একক রাষ্ট্র যত শক্তিশালীই হোক না কেন আমাদেরকে প্রভাবিত করতে পারবে না।’

বোরেল জানান, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ইইউ-চীন সম্পর্কে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। উভয় পক্ষই পরস্পরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে।

বোরেল বলেন, ‘ইইউ রাজনীতির বাইরে গিয়ে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করলেও চীন ব্যতিক্রম। চীন তার চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি গোটা বিশ্বে প্রচার করেছে, মানুষকে জানিয়েছ। মূল বিষয়টি হলো— পারস্পরিক সমর্থন ও আন্তর্জাতিক সংহতি।’

‘এটা সত্যি যে, চীন ও ইইউ— উভয়ই বহুজাতীয়তাবাদ সমর্থন করে। জাতিসংঘের ব্যবস্থার পক্ষে কাজ করে। কিন্তু, আমাদের এটাও স্বীকার করে নিতে হবে, তাদের সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য আছে’, যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago