স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পিরোজপুরে কেনাকাটা চলছে
সামাজিক-শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পরে চলাচলের শর্তে পিরোজপুর শহরের দোকানপাট খুলে দেওয়া হলেও অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতারা মানছেন না সেই নির্দেশনা। যে কারণে জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দোকানগুলোতে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য আজ সোমবার পুলিশের সঙ্গে আনসার সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু, এতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। অনেককে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাঘুরি করে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। তাদের কেউ কেউ শিশুদেরকেও মাস্ক ছাড়াই সঙ্গে নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। সবচেয়ে বেশি ভিড় হচ্ছে কাপড়ের দোকানগুলোতে। করোনাকালেও সাধারণ সময়ের মতোই ঈদের কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। এ কারণে জেলার সচেতন মানুষের মনে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।
পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মুনিরুজ্জামান নাসিম বলেন, ‘পিরোজপুরের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে কয়েক দিনের ব্যবধানে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণে বেড়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত জনসমাগম বন্ধের জন্য আবারও দোকানগুলো লকডাউন করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম বাদল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মানুষকে সচেতন করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরপরও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’
দোকানগুলোতে ভিড় হওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যদি এই অবস্থার পরিবর্তন না হয়, তাহলে পুনরায় বৈঠক করে দোকানগুলো আবারও বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘জমায়েত বন্ধ করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এরপরেও ভিড় কমছে না। যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে, তাহলে আবার বৈঠক করে দোকানগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে, দুই শিফটে পিরোজপুরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা ব্যবসায়ী সমিতি। তখন প্রতিদিন সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মুদিদোকান ও কাঁচাবাজার এবং বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা ছিল।
তবে, গত ১৬ মে এক সভায় জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছিলেন, পরীক্ষামূলকভাবে দুই দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এতে অবস্থা খারাপ হলে সব দোকান পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিদিনই পিরোজপুরে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ১৩ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত পিরোজপুরের সাতটি উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন মাত্র ছয় জন।
Comments