ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’, কোভিড-১৯ ও নিউ নরমাল

কোভিড-১৯ মহামারির এ দুঃসময়ে আরেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ‘এটি অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় আকারে উপকূলে আঘাত হানবে’— এমন তথ্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে তীব্র ঝড়ো বাতাস, ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সতর্কতার উল্লেখ করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ মহামারির এ দুঃসময়ে আরেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ‘এটি অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় আকারে উপকূলে আঘাত হানবে’— এমন তথ্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে তীব্র ঝড়ো বাতাস, ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সতর্কতার উল্লেখ করা হচ্ছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’। অতি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার মাধ্যমে দক্ষ ব্যবস্থাপনায় সমন্বিতভাবে ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা হবে এক নতুন অভিজ্ঞতা।

‘সামাজিক দূরত্ব রক্ষার প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো, স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর আগাম যথাযথ সরবরাহ, পারস্পরিক মানবিকতাবোধ ও সচেতনতা’—  এগুলো এই কঠিন সময়ে সংক্রমণ রোধে ও দুর্যোগ মোকাবিলায় খুবই অপরিহার্য।

জনজীবনের সুরক্ষার কৌশল প্রণয়নে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক গবেষণা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ঘূর্ণিঝড় সিডর (২০০৭ সালের নভেম্বর), আইলা (২০০৯ সালের মে), ভিয়ারু (২০১৩), রোয়ানু (২০১৬), মোরা (২০১৭), বুলবুল (২০১৯) থেকে বাঁচার ও সুরক্ষার উপায় উদ্ভাবনের একমাত্র পন্থা আধুনিক গবেষণা।

আম্পান ঘূর্ণিঝড়টি এখন ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমে অবস্থিত ডপলার আবহাওয়া রাডারের কার্যকর সীমার আওতায় চলে আসায় এটির সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ সম্ভব হচ্ছে। উন্নততর আবহাওয়া গবেষণায় রাডার ডেটার গুরুত্ব অপরিসীম। এ ধরনের ডেটা সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য সহজ প্রাপ্যতা করা দরকার।

সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে সাগরপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, জীবনচক্র প্রভৃতি রাডার ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় বৈজ্ঞানিক গবেষণা আগামীতে সমন্বিত দুর্যোগ মোকাবিলার কৌশল প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সমর্থ হবে। এ ধরনের জনকল্যাণকারী অত্যাধুনিক গবেষণা দুর্লভ ডেটা সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছিল সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্র (এসএমআরসি)।

বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ (ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, বজ্রঝড়, টর্নেডো, তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, খরা, ভারী বৃষ্টি, অকাল বন্যা, বন্যা, নদীভাঙ্গন, ভূমিধ্বস, ভূমিকম্প, সুনামি) ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমাদেরকে গবেষণার প্রয়োজনীয়তার প্রতি আলোকপাত করে। এরপরেও দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র আবহাওয়া ও জলবায়ু বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্র (শেরেবাংলা নগর, ঢাকা) বন্ধ করে এর গবেষক বিজ্ঞানীদের চাকরিচ্যুত করা হয়! কী চমৎকার!

কোভিড-১৯ পরবর্তী নিউ নরমাল কি আমাদের সার্বিক গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে না? বলে কী?

ড. মোহন কুমার দাশ, সিনিয়র গবেষক, পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট, বুয়েট।

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments

The Daily Star  | English

Rab will never again get involved in enforced disappearances, killings: DG

Rab will never get involved in incidents such as enforced disappearances and killings anymore, the force’s Director General AKM Shahidur Rahman said today

1h ago