গাছে উঠতে দিয়ে মই সরালেন কেন?

গতকাল সোমবার সকালে একটি ফেরিতে পার হচ্ছেন কয়েকশ মানুষ। পরে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

শত শত মানুষ আজও তাদের বাড়ির পথে ভিড় জমিয়েছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এবং মানুষের এই চাপের মধ্যেই ফেরি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শত শত মানুষকে ফেরিঘাট পর্যন্ত যেতে দিয়ে তারপর ফেরি বন্ধ করে বাড়িমুখি মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদী তীরে অপেক্ষা করিয়ে লাভ কি?

ফেরি বন্ধ করলেই কি তাদের বাড়ি ফেরা ঠেকানো যাবে? ভিন্ন পথে তারা নদী পার হবেই এবং সেটা হতে পারে আরও ভয়ঙ্কর।

ছোট ছোট নৌযানে করে তারা নদী পার হবে। তার পরিণতি আরেও খারাপ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। ফলে উত্তাল থাকতে পারে নদী

আমাদের প্রতিবেদকের পাঠানো তথ্য মতে, প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষ গতকাল ফেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সারা রাত খোলা আকাশের নীচে কাটিয়েছে। এদের মধ্যে ছোট ছোট বাচ্চাদেরও দেখে গেছে। আজও যদি পারাপার বন্ধ থাকে, এই মানুষগুলো খাবে কি? থাকবে কোথায়? ঢাকায় ফিরে আসার অবস্থাও কি সবার আছে? ফিরলেও রাজধানীতে ঢুকতে পারবে কি?

আমার মনে হয়, যারা সব বাধা উপেক্ষা করে নদী তীর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, তাদেরকে নির্বিঘ্নে এবং নিরাপদে নদী পার করে দেওয়া উচিত।

করোনা সংক্রমণের এই পর্যায়ে মানুষের এভাবে বাড়ি ফেরা উচিত হচ্ছে না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাজধানীতে ঢোকা ও বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। তাই যদি হয়, তাহলে মানুষ ঘাট পর্যন্ত পৌঁছালো কিভাবে?

গতকাল এবং আজ রাস্তায় কিংবা ফেরিতে থাকা এই শত শত মানুষের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে এবং প্রায় সবাই সমালোচনামুখর এই মানুষগুলোর প্রতি।

কিন্তু একবার তাকিয়ে দেখেছেন এই মানুষগুলোর চেহারার দিকে? তাদের চাহনির দিকে? এরা কি শুধুই ঘরমুখো বাঙ্গালী, নাকি বাস্তবতা তাদেরকে বাধ্য করছে বাড়ি যেতে? সবকিছু বন্ধ থাকায় এই মানুষগুলোর কতো ভাগের ঈদের পর ঢাকায় ফেরার বাস্তবতা আছে? চিন্তা করেছেন একবার?

একে খাবার কষ্ট, তার উপর বাসা ভাড়ার বাড়তি চাপ তাদের অনেককে হয়তো বাধ্য করেছে বাড়ি ফিরে যেতে।

ঈদের সময় বাড়ি গেলে এই মানুষগুলো হয়তো তাদের এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের বা তাদের এলাকার ধনী মানুষদের সাহায্য পাবে। ঢাকায় তাদের খাবার দেবে কে? তাদের বাসা ভাড়া যোগাবে কে?

আমার কিন্তু বাড়িমুখি পায়ে হেঁটে যাওয়া এই শত শত মানুষকে দেখে রাগ হয়নি। তারা ঢাকা থেকে গিয়ে করোনাভাইরাস গ্রামেও ছড়িয়ে দেবে সেটাও মনে হয়নি, বরং শঙ্কিত হচ্ছি তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে।

লেখক: চিফ রিপোর্টার, দ্য ডেইলি স্টার

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Trump says Iran has 'maximum' two weeks, dismisses Europe peace efforts

Israel's war with Iran entered its second week on Friday with the Israeli military chief warning of a "prolonged campaign"

3h ago