লিচুর বাম্পার ফলন হয়েও দাম পাচ্ছে না রাঙ্গামাটির কৃষকরা
লিচুর মৌসুমে প্রতিবছর ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিতে ফল কিনতে আসেন ব্যবসায়ীরা। রাঙ্গামাটির বাজারে এবং ফলের বাগানগুলোতে পাইকার ব্যবসায়ীদের ভিড় লেগে থাকত। এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েও ব্যবসায়ীরা না আসায় দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা।
অনুকূল আবহাওয়ার কারণে রাঙামাটি পার্বত্য এলাকায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে স্থানীয় বাজারে লিচুর দাম কম থাকায় বাগান মালিকরা হতাশ।
সরেজমিনে রাঙ্গামাটি শহরের ভাসমান ফলের বাজার সমতাঘাটে গিয়ে দেখা যায়, আকার ভেদে ১০০টি দেশি লিচু ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছরও এই লিচুর দাম ছিল ৮০-১০০ টাকা। চায়না-৩ লিচু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০-১২০ টাকায়। গেল বছর উন্নত জাতের সুস্বাদু এই লিচু বিক্রি হয়েছিল ২০০-২৫০ টাকায়।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙা ইউনিয়নের লিচু বাগানের মালিক সুমতি রঞ্জন চাকমার বাগানে ২০০ লিচু গাছ রয়েছে। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, এ বছর লিচুর উৎপাদন খুব ভালো হলে কি হবে দাম পাচ্ছি না। গত বছর ব্যবসায়ীরা সরাসরি বাগানে এসে ফল পাকবার আগেই পুরো বাগান কিনে নিয়েছিল। এই বছর তারা আসেনি। বাজারে নিজে বিক্রি করতে গিয়েও দাম পাচ্ছি না।
একই ইউনিয়নের হারেক্ষং গ্রামের শান্ত কুমার চাকমা (৪০) জানান, গত বছর তিনি লিচু বিক্রি করে এক লাখ টাকা পেয়েছিলেন। এবার অর্ধেকও দাম পাননি তিনি।
স্থানীয় ফলের ব্যবসায়ী মুহাম্মদ মনির জানান, করোনার ভয়ে ব্যবসায়ীরা এ বছর রাঙ্গামাটিতে আসতে পারেনি। স্থানীয় ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কিছু ফল কিনে ব্যবসা চালাচ্ছি। কিন্তু লোকজন লকডাউনে বাড়িতে আটকে থাকায় কাঙ্ক্ষিত সংখ্যায় ক্রেতা নেই।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য বলছে, জেলা জুড়ে প্রায় চার হাজার ৫৭০ একর জমিতে লিচু গাছ আছে। চলতি মৌসুমে কমপক্ষে ১৫ হাজার মেট্রিকটন লিচু উৎপাদিত হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা ডেইলি স্টারকে বলেন, এটা সত্য যে এই বছর মহামারির কারণে কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। তবে এই বছর লিচুর উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে।
Comments