ফোন ভেঙে ফেলার অপবাদ দিয়ে অভিনব কায়দায় চুরি

দেশে করোনা পরিস্থিতিতে ফাঁকা রাস্তার সুযোগে অভিনব কৌশলে ঘটছে চুরির ঘটনা। কারো মনে সন্দেহ তৈরি না করে এমনকি ভিড়ের মাঝেও কৌশলে মালামাল চুরি করছে অপরাধীরা।
সিসিটিভি ফুটেজে জাহিদ খান ও রিকশা চালককে দেখা যাচ্ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিনব কায়দায় রিকশায় থাকা জাহিদের মালপত্র চুরি হয়ে যায়। বাবু বাজার, ঢকা, ১২ মে। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

দেশে করোনা পরিস্থিতিতে ফাঁকা রাস্তার সুযোগে অভিনব কৌশলে ঘটছে চুরির ঘটনা। কারো মনে সন্দেহ তৈরি না করে এমনকি ভিড়ের মাঝেও কৌশলে মালামাল চুরি করছে অপরাধীরা।

গত ১২ মে জাহিদ খান নাদিম নামের এক উদ্যোক্তা পুরান ঢাকার ইসলামপুর মার্কেট থেকে রিকশায় চড়ে বাবুবাজার যাচ্ছিলেন। অনলাইনে বিক্রির জন্য তিনি ১০৫টি পোশাক কিনেছিলেন। সহকারী রবিউলকে সঙ্গে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি রিকশায় ওঠেন।

মাঝপথে রিকশাচালক তাকে জানান চাকার বেয়ারিং ভেঙে গেছে। চালককে সাহায্য করার জন্য তারা রিকশা থেকে নামেন।

এমন সময় হঠাৎ করে এক তরুণ পিছন থেকে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে মাটিতে ফেলে দেয়।

এরপরই ছেলেটি চিৎকার করতে শুরু করেন যে, রবিউল তাকে ধাক্কা দিয়েছে। এ কারণে তিনি পড়ে গেছেন। ধাক্কা লাগায় মাটিতে পড়ে তার ফোন ভেঙে গেছে। শুরু হয় বাগবিতণ্ডা।

রবিউল তাকে শান্ত করতে গিয়ে খেয়াল করেন এর মধ্যেই ওই রিকশাচালক তার ১০৫টি পোশাক নিয়ে কেটে পড়েছে।

এর দুই দিন পর, একই ঘটনা ঘটেছে সানোয়ার হোসাইন সানুর সঙ্গে। সদরঘাটের গ্রেটওয়াল শপিং কমপ্লেক্স থেকে রিকশায় চড়ে ফিরছিলেন তিনি। এক বান্ডেলে মোট ১৬৮টি পাঞ্জাবি ছিল সঙ্গে। পাঞ্জাবি যখন ভ্যানে তুলছিলেন তখন পাশ থেকে এক তরুণ একইভাবে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। মোবাইল ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ করেন। বিভ্রান্তি ও কথা কাটাকাটির মধ্যেই ভ্যান চালক পোশাকগুলো নিয়ে পালিয়ে যান।

পুরান ঢাকার এই দুটি চুরির ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, এই দুই ঘটনার ভুক্তভোগীদের মূল্যবান মালামাল উদ্ধার এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, অপরাধীদের কয়েকটি ছোট দল সংঘবদ্ধভাবে এই অভিনব কায়দায় চুরি করছে। করোনা পরিস্থিতিতে রাস্তা ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে কৌশলে এই অপরাধ হচ্ছে।

সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অপরাধীরা রিকশাচালক, ভ্যানচালক এমনকি কুমোরের রূপ ধরে এই ধরনের অপরাধ করছে। প্রায় ৪-৫ জন সংঘবদ্ধ হয়ে এ ধরনের অপরাধ করছে।’

তিনি আরও জানান, এই ধরনের ঘটনায় এক-দুইজন ভুক্তভোগীকে কথা কাটাকাটিতে ব্যস্ত রাখে। এর মধ্যে চালক কৌশলে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

ওসি ওয়াজেদের কাছে সানুর ছিনতাইকারীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আটককৃতকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। আশা করি, জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা মালামাল খুঁজে পাব। জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তার করতে পারব।’

সানুর ঘটনায় একজন আটক হলেও জাহিদ খানের মালপত্র চুরির ঘটনায় অপরাধীদের ধরার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

তিনি বলেন, ‘অনেকবার আমি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ব্যস্ত। এখন ঘটনাটি তদন্ত করার মতো সময় নেই।’

বাবু বাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আখতারুজ্জামান জানান, তারা অপরাধীদের খুঁজে বের করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখনো কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago