‘ঘরে খাবার নাই, করোনার ভয়ও নাই’

পুরাতন কচুক্ষেত এলাকার বাসিন্দা চার সন্তানের জননী মাসুদা বেগম। প্রতিদিনের মতো আজও এক সন্তানকে কোলে নিয়ে মিরপুর ১৪ নম্বর ডেন্টাল কলেজের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চাচ্ছিলেন।
ছবি: স্টার

পুরাতন কচুক্ষেত এলাকার বাসিন্দা চার সন্তানের জননী মাসুদা বেগম। প্রতিদিনের মতো আজও এক সন্তানকে কোলে নিয়ে মিরপুর ১৪ নম্বর ডেন্টাল কলেজের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষের কাছে সাহায্য চাচ্ছিলেন।

তার সঙ্গে কথা বলার জন্য দাঁড়াতেই প্রায় অর্ধশত নারী ও পুরুষ ঘিরে ধরে সাহায্যের জন্য। নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা চলে যায়। মাসুদার কাছে জানতে চাই, রাস্তার মাঝে এভাবে সামাজিক দূরত্ব না মেনে সাহায্য চাচ্ছেন কেন? মাসুদা জানান, তার স্বামী রিকশাচালক। ছয় সদস্যের পরিবারে একমাত্র তিনিই উপার্জন করেন। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে সে ঘরে বসা। সেভাবে কোথাও থেকে কোনো আর্থিক সাহায্যও তারা পাননি। তাই জীবিকার জন্য সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতেই রাস্তায় নেমেছেন মাসুদা।

এক মাসের বেশি হলো, প্রতিদিন ভোরে ছোট সন্তানকে কোলে করে রাস্তায় বের হন মাসুদা। কেউ নগদ টাকা, কেউ চাল-ডাল, আবার কেউ রান্না খাবারের প্যাকেট দেয়। এগুলো বাসায় নিয়ে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেন তিনি। যদিও বর্তমানে ঈদ উপলক্ষে কদিন ধরে তার স্বামী আবার রিকশা চালাচ্ছেন, কিন্তু আগে রিকশা নিয়ে বের হলেই পুলিশ রিকশার সিট নিয়ে যেত।

রাস্তায় কেউ সাহায্য দিতে আসলেই এই মানুষগুলো হুড়োহুড়ি শুরু করে দেয়। কে কার আগে সাহায্য নেবে, সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে যায়।

সাহায্যের আশায় বসে থাকা এই মানুষগুলোর কাছে মাস্ক মানে বিলাসিতা। ক্ষুধার কাছে সামাজিক দূরত্ব যেন অলীক কোনো বস্তু। মুখের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে মাসুদা বললেন, ‘ঘরে খাবার নাই, করোনার ভয়ও নাই।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

13h ago