পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চল
ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অতিবৃষ্টিতে সিলেটের উত্তরের উপজেলা গোয়াইনঘাটের সারি, পিয়াইন ও গোয়াইন নদীতে পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল।
২৫টি গ্রাম ও প্রধান সংযোগ সড়ক প্লাবিত হয়ে উপজেলার সঙ্গে অন্যান্য উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া অসংখ্য বাড়িঘর ও আউশ ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম সরকার জানান, ‘পাহাড়ি ঢলে সারি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পিয়াইন ও গোয়াইন নদীর পানিও সারাদিন বেড়েছে। সীমান্তের ওপার মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত বাড়লে স্থায়ী বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে।’
পাউবোর সারিঘাট গেজ স্টেশনের তথ্য অনুযায়ী সারি নদীর পানি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যা সকাল ৬টায় ৩ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। এ নদীতে নিরাপদ জলস্তরের সীমা ১১ দশমিক ৭৭ মিটার।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুস সাকিব জানান, ‘এখন পর্যন্ত উপজেলার ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে অন্যান্য উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি জাফলং ও সারিঘাট এলাকার সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।’
প্লাবিত গ্রামগুলোতে বহু বাড়িতে এক থেকে দেড়ফুট পানি উঠেছে বলে জানান তিনি।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী জানান, ‘নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান তোলার কাজ শেষ হওয়ায় সেদিক থেকে ক্ষতি হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত ১৫ হেক্টরের মতো আউশ ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। উপজেলায় ৩৫০ হেক্টরের মতো বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যদি পানি আরও বাড়ে এবং দুই-তিন দিন জমে থাকে তাহলে বীজতলার ক্ষতি হবে।’
এ ছাড়াও আকস্মিক ঢলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার জাফলং চা বাগানের একাংশ।
বাগানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মারুফ আহমেদ চৌধুরী জানান, নদীর পানি বেড়ে সরু খাল দিয়ে বাগানের ভিতর, রাস্তাঘাট ও বেশ কিছু বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে পানি একটু কমলেও বাগানে পানি জমে আছে। পানি বাড়লে চা-বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হবে।’
এদিকে ভারতের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন (সিডাব্লিউসি) আসাম রাজ্যের জোরহাট ও সোনিতপুরে বন্যার পূর্বাভাস জারি করেছে বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে হিন্দুস্থান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ মে থেকে আসামের কিছু অংশ ও মেঘালয়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারতের ন্যাশনাল ওয়েদার ফোরকাস্টি সেন্টারের প্রধান কে সাথী দেবীর বরাতে জানানো হয়, মেঘালয়, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে আরও অন্তত তিন দিন প্রবল বৃষ্টি চলবে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) আমরা উপজেলার প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বন্যার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’
Comments