বাংলাদেশকে অবশ্যই সাংবাদিক নিপীড়নের অবসান ঘটাতে হবে: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের বিবৃতি
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। বুধবার, জেনেভা থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে বাংলাদেশের সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ওপর নিপীড়ন ও এর আগে তার সন্দেহজনক গুমের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানানো হয়।
কাজলের আটকাদেশ ও তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর কারণে বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা জানান বিশেষজ্ঞরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শফিকুল ইসলাম কাজলের মতো অনুসন্ধানী সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করায় মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের নিপীড়ন গণমাধ্যমকর্মী, তাদের পরিবার এবং সার্বিকভাবে পুরো সমাজের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। সমাজ, গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতার জন্য গণমাধ্যম অপরিহার্য।’
এতে আরও বলা হয়, ‘গত ১০ মার্চ গুম হওয়ার আগে কাজল যৌনকর্মী হিসেবে মানবপাচার নিয়ে প্রতিবেদন করছিলেন, যার সাথে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের সম্পৃক্ততার কথা জানা যায়। এই প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষমতাসীন দলের দুজন উচ্চ পর্যায়ের নেতা কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এরপর পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় তদন্ত শুরু করে।’
‘গত ৩ মে কাজলকে চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় ভারত সীমান্তে পাওয়া যায়। এ সময় কাজলকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য আটক করা হয়। অনুপ্রবেশের অভিযোগে কাজলকে জামিন ও মুক্তির নির্দেশ দিলেও আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় চলমান তদন্তের কারণে ১৫ দিনের আটকাদেশ দেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কাজলকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।’
বিশেষজ্ঞরা বিবৃতিতে জানান, ‘আমরা তার আটকের বৈধতা পর্যাপ্ত বিচারিক পর্যালোচনা সাপেক্ষে হয়েছে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আইনিভিত্তি ছাড়াই তাকে আটক করা হলে এটি মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন হতে পারে। আটককৃতরা কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকিতেও রয়েছেন।'
বিবৃতি দেন জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ডেভিড কাই, অ্যাগনেস কালামার্ড, লুজিয়ানো এ. হাজান, তায়-উং বাইক, হোরিয়া এস-স্লামি, হেনরিকাস মিকেভিসিউস, বার্নারড ডুহাইমে, দাইনিয়ুস পুরাস।
Comments