কয়রা ছাড়ছেন শত শত মানুষ

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে আশ্রয় হারিয়ে খুলনার কয়রা উপজেলা ছাড়ছেন শত শত মানুষ। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সহায়তা দেওয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। প্রতিদিনই জোয়ারের সঙ্গে বাড়ছে পানি। সেই সঙ্গে বাড়ছে পানিবাহিত ও অন্যান্য রোগ।
Koyra_Displaced_People_1.jpg
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে আশ্রয় হারিয়ে খুলনার কয়রা উপজেলা ছাড়ছেন শত শত মানুষ। ছবি: স্টার

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে আশ্রয় হারিয়ে খুলনার কয়রা উপজেলা ছাড়ছেন শত শত মানুষ। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সহায়তা দেওয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। প্রতিদিনই জোয়ারের সঙ্গে বাড়ছে পানি। সেই সঙ্গে বাড়ছে পানিবাহিত ও অন্যান্য রোগ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কাদা-পানি মাড়িয়ে শত শত মানুষকে হরিণখোলা বাঁধের দিকে যেতে দেখা যায়। তাদেরই একজন মাহমুদা আক্তার। সঙ্গে তার ছেলে ইমন (১২), কোলে তিন মাস বয়সী ছেলে আলিফ। ২নং কয়রা গ্রাম থেকে তারা বড় মেয়ের কাছে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চৌকুনী গ্রামে যাচ্ছেন। ঝড়ে ঘর-আসবাবপত্র সবই হারিয়ে গেছে। সঙ্গে নিতে পেরেছেন শুধু দুটি ছাগল ও তিনটি রাজহাঁস।

ওই গ্রামের ভোটার সংখ্যা অন্তত সাত হাজার। আম্পানের আঘাতে বেড়িবাঁধের ৩ কিলোমিটার ভেসে যাওয়ায় প্রত্যেকের অবস্থা একই রকম। লঘুচাপের প্রভাবে সকাল থেকেই থেমে থেমে নামছে বৃষ্টি। এর ভেতরে মেয়েকে নিয়ে মহারাজপুর ইউনিয়নে আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নেবেন বলে বের হয়েছেন গোলখালি গ্রামের সাগর শেখ।

Koyra_Displaced_People_2.jpg
মেয়েকে নিয়ে মহারাজপুর ইউনিয়নে আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নেবেন বলে বের হয়েছেন গোলখালি গ্রামের সাগর শেখ। ছবি: স্টার

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাড়িতে থাকার কোনো উপায় নেই। বাঁধ ডুবে গেছে, রাস্তাও ডুবে গেছে। দিন এনে দিন খাওয়া, হাতে কোনো টাকাও নেই। ঘরে যা ছিল সব পানির নিচে।’

সূত্র জানায়, আম্পানে পুরো উপজেলায় প্রায় দুই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চারটি ইউনিয়নে ৫০ মেট্রিক টন চাল, ৭৫ লাখ টাকা ও পাঁচ শ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

Koyra_Displaced_People_3.jpg
স্টার ফাইল ফটো

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘ মেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে গেল। জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ারের সঙ্গে সাগরের পানি ঢুকেছে। এই পানিতে লবণের মাত্র স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। যে কারণে চর্ম রোগ ও অন্যান্য রোগ বেড়ে গেছে। খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েল ও অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিক পানির নিচে। শুধু শারীরিক সমস্যা নয়, এই এলাকার মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যও বড় ঝুঁকিতে পড়েছে।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী মোস্তাহিম বিল্লাহ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০ হাজার গরু-ছাগল অন্য উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন, ‘আমি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছি। এখানকার অবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

32m ago