করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য এক মাসের অপেক্ষা

কয়েকদিন ধরে করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ভুগছেন আনিছুর রহমান (২২)। করোনা উপসর্গ থাকায় গত বৃহস্পতিবার সকালে নমুনা পরীক্ষার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন তিনি। তবে, সেখানে গিয়ে তিনি তাৎক্ষণিক নমুনা পরীক্ষা করাতে পারেননি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয় ডাটা এন্টি করতে। পরামর্শ অনুযায়ী ডাটা এন্ট্রি করলে আগামী মাসের ৩০ তারিখে তার নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়।
ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ

কয়েকদিন ধরে করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ভুগছেন আনিছুর রহমান (২২)। করোনা উপসর্গ থাকায় গত বৃহস্পতিবার সকালে নমুনা পরীক্ষার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন তিনি। তবে, সেখানে গিয়ে তিনি তাৎক্ষণিক নমুনা পরীক্ষা করাতে পারেননি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয় ডাটা এন্টি করতে। পরামর্শ অনুযায়ী ডাটা এন্ট্রি করলে আগামী মাসের ৩০ তারিখে তার নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়।

দ্য ডেইলি স্টারকে আনিসুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েদিন ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশিজনিত সমস্যায় ভূগছি। তাই গত ২৮ মে সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যায়, যেখানে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা করোনা শনাক্ত করতে নমুনা সংগ্রহ করেন। সেদিন আমার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। কিন্তু, তাদের পরামর্শ অনুযায়ী নাম নথিভুক্ত করি। তারা আমার সিরিয়াল নাম্বার রেখে দেন এবং জানান আগামী ৩০ জুন আমার নমুনা সংগ্রহ করা হবে।’

‘আমার নমুনা পরীক্ষা করার দরকার এখন। কিন্তু, নমুনা পরীক্ষা করা হবে এক মাস পর। এই পরীক্ষা দিয়ে কি হবে?’ প্রশ্ন করেন আনিছুর রহমান।

আনিছুরের অভিযোগের সূত্র ধরে দ্য ডেইলি স্টারের সাভার প্রতিনিধি আজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখানে শতাধিক মানুষকে নমুনা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

সেখানে উপস্থিত অনেকেই আনিছুরের মতো একই অভিযোগ করেন।

গত ১৮ মে থেকে থেকে পোশাক শ্রমিক সানি রহমান (২৮) স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরছেন। কিন্তু, এখনো তিনি নমুনা পরীক্ষা করাতে পারেননি। সর্বশেষ আজ আবারও তাকে নমুনা পরীক্ষার জন্য ডাটা এন্ট্রি করতে বলা হয়েছে। তার স্ত্রীর নমুনা পরীক্ষার তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

একই অভিযোগ করেন রনি আহম্মেদ (৩২)। তিনি কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথাজনিত সমস্যায় ভুগছেন।

রনি আহম্মেদ বলেন, ‘গত ২৭ মে ভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলাম। সেদিন নমুনা পরীক্ষা না করে আগামী ২৭ জুন নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়। শরীরে প্রচণ্ড জ্বর ও কাশি থাকায় আইইডিসিআরের হট লাইনে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু, তাতে কোনো লাভ হয়নি। আইইডিসিআর থেকে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মোবাইল নাম্বার সরবরাহ করে ও তাতে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু, অনেকবার ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করছেন না। আমি অনেক অসুস্থ। যদি সময় মতো পরীক্ষা করাতে না পারি তাহলে আরও অসুস্থ হয়ে যাব। পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহীনিসহ উচ্চ পর্য়ায়ের মানুষের সরাসরি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু, আমরা যারা সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা দ্য ডেইলি স্টারকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আসলে সাভার একটি বিশাল জনবহুল এলাকা। জনবল অনুযায়ী আমাদের প্রতিদিন ৩০ থেকে ৬০ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করার ক্যাপাসিটি রয়েছে। সেখানে গত ১০ দিনে গড়ে ৮০ থেকে ৯০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা নিজ উদ্যোগে এগুলো করছি। এখানে যে পরিমাণ রোগী আসে প্রতিদিন ৫০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করতে পারলে সমস্যা হতো না। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি তাই সিরিয়াল মানতে হচ্ছে। তারপরও শরীরের তাপমাত্রা অনুযায়ী প্রতিদিন ১০ জনকে সরাসরি পরীক্ষা করা হচ্ছে।’

সায়েমুল হুদা আরও বলেন, ‘সাভার ও আশুলিয়ায় এত সংখ্যক পোশাক শ্রমিকের নমুনা সংগ্রহ করা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই পোশাক কারখানার মালিক ও বিজিএমইএর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। খুব শিগগির সাভার শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পৃথক একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

9h ago