চিকিৎসক আক্রান্ত হলে ১০ দিনের আইসোলেশন, সংস্পর্শে আসলে নয়
কোনো চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হলে কেবল ১০ দিন আইসোলেশনে থাকতে পারবেন। সেই সঙ্গে, চিকিৎসকের সংস্পর্শে কোনো করোনা রোগী চলে এলেও তাকে চালিয়ে যেতে হবে স্বাভাবিক কাজ। এর ব্যত্যয় হলে অনুপস্থিত হিসেবে ধরা হবে।
শনিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করোনা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পাঁচ দফা জরুরি নির্দেশনা সম্বলিত আদেশে আজ এসব কথা বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয় যে সকল চিকিৎসক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন তারা হাসপাতাল বা আইলোসনে থাকার ১০ দিন সুযোগ পাবেন। এর পর কাজে যোগ দেওয়ার কথা স্পষ্ট উল্লেখ না থাকলেও চিকিৎসকরা বলছেন এটা পরোক্ষভাবে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের সুযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নেই।
নির্দেশনার দুই নাম্বারে বলা হয়েছে--কোন চিকিৎসক করোনা রোগীর সংস্পর্শে এলেও তাকে আইসোলেশনে যেতে হবে না। তিনি তার স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যাবেন। কাজে যোগদান না করলে সেটা অনুপস্থিতি হিসেবে গণ্য হবে।
তৃতীয়ত, চিকিৎসক বসবাস করছেন এমন কোনো ভবন লকডাউন হলে তিনি লকডাউনের আওতার বাইরে থেকে চিকিৎসককে কাজে যোগ দিতে হবে।
চার নম্বর নির্দেশনায়, চমেক হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পৃথিবীর যত দেশ করোনা আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে কোনো দেশে এ ধরনের উদ্ভট ও অদ্ভুত নির্দেশনা রয়েছে কী না সন্দেহ আছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সুরক্ষা সামগ্রী দিবেন না ঠিক আছে। কিন্তু আক্রান্ত চিকিৎসকদের সুস্থ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে তাকে যদি কাজে যোগদান করতে বলা হয় তাহলে তার মানসিক অবস্থা কী হতে পারে সেটা কর্তৃপক্ষ কোনো মনোবিদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারত।’
চিঠির এসব নির্দেশনা চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে যা করোনার চিকিৎসায় একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা ওই সহযোগী অধ্যাপকের।
জানতে চাইলে চমেকের অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ শামীম হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সভা করে এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি। সবাই সম্মতি দিয়েছে বলেই সিদ্ধান্তগুলো এসেছে। তারপরও মুদ্রণজনিত কিছু ভুলভ্রান্তি আছে চিঠিতে যেগুলো আমরা কাল পরিমার্জন করে দেব।
১০ দিনে কোনো করোনা রোগী সুস্থ হয় কী না বা এরকম কোন সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যায় কী না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসক সংকট। অনেকে কাজ করতে চাইছেন না এ সময়ে। আমরা কী করতে পারি। মন্ত্রণালয়ে নির্দেশনা যে কোন পরিস্থিতিতে করোনার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে।
করোনার লক্ষণ প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকরা তাদের স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যাবেন—এটা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বলে তিনি জানান।
তার ভাষ্য, সরকার থেকে তিনি পিপিই পাননি, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাননি। তিনি কীভাবে কোথা থেকে সুরক্ষা সামগ্রী দিবেন।
Comments