প্রবাস

অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশের নতুন রুট বলকান অঞ্চলের ইতিকথা

Human trafficking
ছবি: রয়টার্স

গত ২৮ মে লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিজদাহতে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার সংবাদটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে।

বেশ কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, এ ঘটনায় নিহত কিংবা আহতদের অনেকেরই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে প্রবেশের জন্য লিবিয়াকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবারও উঠে এসেছে বিশ্বব্যাপী জালের মতো ছড়িয়ে থাকা মানবপাচারের কথা।

উন্নত জীবনের আশায় বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত অনেক দেশ থেকে প্রতি বছর হাজারো মানুষ ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। তাদের অনেকের বৈধ ভিসা থাকলেও একটি বড় অংশের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশ নামক মরীচিকায় বিভোর হয়ে কোনো কিছু চিন্তা না করেই ছুটে যান অজানার উদ্দেশে।

বিশেষত, অবৈধ পথে যারা ইউরোপে যেতে চান তাদের অনেকে এক সময় লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি অথবা গ্রিস অথবা আজারবাইজান থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রিস ও গ্রিস থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশ বিশেষ করে ইতালি কিংবা স্পেনে যাওয়ার চেষ্টা করতেন।

সম্প্রতি, ইতালি ও গ্রিসের কোস্টগার্ডের তৎপরতার কারণে ও একই সঙ্গে পালেরমো প্রটোকলের কারণে এখন সহজে কেউ সাগরপথে এ রুট দিয়ে ইতালিতে কিংবা গ্রিসে ঢুকতে পারেন না। যদিও এ রুট দিয়ে এখনও অনেকে ইউরোপে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন।

বর্তমানে এ দুটি রুটের পাশাপাশি আরও একটি রুট ইউরোপের বিভিন্ন দেশ বিশেষত ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও একই সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে গঠিত কমন বর্ডার ফ্রেম অর্থাৎ সেনজেনের অন্তর্ভুক্ত কোনো দেশে অবৈধভাবে প্রবেশের পথ হয়ে উঠেছে। এ রুটটি হচ্ছে বলকানের রুট।

তুরস্ক হয়ে অবৈধভাবে যারা গ্রিসে প্রবেশ করছেন তাদের বেশির ভাগই দেশটির ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতি ও একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিস্তোতাকিসের অভিবাসন বিষয়ে অতি ডানপন্থি নীতির কারণে খুব বেশিদিন গ্রিসে স্থায়ী হতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তাদেরকে গ্রিস থেকে ইউরোপের অন্য কোনো দেশ বিশেষ করে ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল কিংবা স্পেনে পাড়ি জমানোর কথা চিন্তা করতে হচ্ছে।

যেহেতু এখন চাইলে আগের মতো গ্রিস থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, তাই তাদেরকে বিকল্প পথে ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল কিংবা স্পেনে পৌঁছানোর কথা ভাবতে হচ্ছে। এজন্য তাদের অনেকে এখন বলকান অঞ্চল দিয়ে গ্রিস হয়ে ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল কিংবা স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল কিংবা স্পেনের সরকারের অভিবাসন বিষয়ে নমনীয় নীতির কারণে সবার লক্ষ্য থাকে ইউরোপের এই চারটি দেশ। অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের পর সবাই প্রথমে চেষ্টা করে অ্যাসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে ইতালির প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী মাতিও সালভিনি প্রশাসনের গৃহীত নীতির কারণে ইতালি অভিবাসন বিষয়ে এখন আর আগের মতো নমনীয় নেই বললেই চলে।

বলকান দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এশিয়া ও ইউরোপের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এটিকে ইউরোপের প্রবেশদ্বার বলা হয়। বুলগেরিয়া থেকে পূর্ব সার্বিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বলকান পর্বতমালার নামে এ অঞ্চলটির নামকরণ করা হয়েছে।

সমগ্ৰ আলবেনিয়া, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, মেসিডোনিয়া, মন্টিনিগ্রো, গ্রিস, কসোভো, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, রোমানিয়া ও হাঙ্গেরির সামান্য অংশ নিয়ে বলকান অঞ্চল।

গ্রিস থেকে মেসিডোনিয়া হয়ে কিংবা গ্রিস থেকে আলবেনিয়া ও কসোভো, মন্টিনিগ্রো, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা হয়ে প্রথমে সবাই সার্বিয়াতে পা রাখার চেষ্টা করেন। সার্বিয়া থেকে দুই ভাবে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, পর্তুগালসহ সেনজেনের অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করা যায়।

হাঙ্গেরির সঙ্গে সার্বিয়ার সীমান্ত রয়েছে এবং সার্বিয়া থেকে ক্রোয়েশিয়া হয়ে স্লোভেনিয়া যাওয়া যায়। এছাড়াও, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা কিংবা মন্টিনিগ্রো থেকে ক্রোয়েশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া থেকে স্লোভেনিয়া হয়ে অনেকে সেনজেন রাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা করেন।

সেনজেন রাষ্ট্রে কোনোভাবে ঢুকতে পারলে সহজে এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত অন্য রাষ্ট্রে যাওয়া সহজ হয়। বিশেষ করে সীমান্ত উন্মুক্ত থাকায় ও একই সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া ধরা পড়ার সম্ভাবনা না থাকায় সড়ক ও রেলপথে সহজে সেনজেনের অন্তর্ভুক্ত এক রাষ্ট্র থেকে অন্য রাষ্ট্রে চলাচল করা যায়।

অনেকে আবার তুরস্ক থেকে গ্রিসে না গিয়ে বুলগেরিয়ায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। তারপর, সেখান থেকে রোমানিয়া অথবা ইউক্রেন হয়ে হাঙ্গেরি কিংবা বুলগেরিয়া থেকে সার্বিয়া হয়ে হাঙ্গেরি অথবা ক্রোয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।

আমাদের দেশের মানুষের মাপকাঠিতে ইউরোপ যেমন বলকান অঞ্চলগুলোর ক্ষেত্রে সে জিনিসটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রথমত ইউরোপের অন্যান্য অংশের তুলনায় বলকান দেশগুলো অর্থনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে দুর্বল। একই সঙ্গে দুর্নীতি ও আইনের অনুশাসনের অভাবে এ অঞ্চলে অপরাধ প্রবণতার মাত্রা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে, সার্বিয়ার অবস্থান এই সূচকে সবার নিচে।

বলকান দেশগুলোকে ঘিরে বর্তমানে ইউরোপে মানবপাচারের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। পায়ে হেঁটে, ঘন বন-জঙ্গল পাড়ি দিয়ে কিংবা পাহাড় বেয়ে এমনকী, খরস্রোতা নদীতে সাঁতার কেঁটে রাতের অন্ধকারে কাঁটাতারের সীমানা ডেঙিয়ে অনেকে স্বপ্নের ইউরোপে পা রাখতে চান।

এক একটা দিন যেন তাদের জীবনের এক একটি দুঃস্বপ্নের নাম। অর্ধাহারে-অনাহারে, কখনো গাছের পাতা খেয়েও অনেকে একেকটি দিন অতিবাহিত করেন। ভাগ্য খারাপ হলে এক গ্লাস পানিও জোটে না। পথে বিভিন্ন কারণে অনেক প্রাণ ঝরে যায়। পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রিয় মানুষটির লাশও পৌঁছায় না অনেক সময়। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারলে অনেক সময় দালালদের হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশ সার্বিয়া, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, আলবেনিয়া, কসোভো, মেসিডোনিয়াতে সেনজেন দেশগুলোর তুলনায় অনেক সহজে ভিসা পাওয়া যায়। বর্তমানে এ সুযোগটি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন অনেকে।

ঐতিহাসিকভাবে স্লোভেনিয়া, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া একে-অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। স্লোভেনিয়ার রাজধানী লুবলিয়ানা হলেও প্রকৃতপক্ষে ইতালির ত্রিয়েস্তে ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত এর সবচেয়ে বড় শহর ছিল। সেখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক স্লোভেনিয়ানদের বসবাস ছিল।

এছাড়াও, স্লোভেনিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার আড্রিয়াটিক সাগরের উপকূলবর্তী এলাকা যেমন— কপার, ইজোলা, পোর্তোরস কিংবা ক্রোয়েশিয়ার পুলা অথবা পরেচে প্রচুর সংখ্যক ইতালিয়ান বাস করেন। এ সব জায়গায় যারা স্থায়ী হন তাদেরকে স্লোভেনিয়ান অথবা ক্রোয়েশিয়ান ও ইতালিয়ান দুই ভাষাতেই দক্ষ হতে হয়। এখানকার শিক্ষা-প্ৰতিষ্ঠানগুলোতেও উভয় ভাষায় পাঠদান করা হয়ে থাকে।

সার্বিয়া, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা ও মন্টিনিগ্রো থেকে ক্রোয়েশিয়া হয়ে এভাবে অনেকে এখন স্লোভেনিয়াতে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। স্লোভেনিয়া থেকে এ রুটে সহজে ইতালি যাওয়া যায়।

গত সেপ্টেম্বরে আমি সার্বিয়ায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। সার্বিয়া ও হাঙ্গেরির সীমান্তবর্তী একটি শহর সুবোটিচা। হাঙ্গেরির স্থানীয় ভাষায় এ শহরটিকে ডাকা হয় সাবাদকা নামে। সেখানে আমার সঙ্গে আচমকা এক বাংলাদেশির পরিচয় হয়। তিনি সে সময় সুবোটিচার কাছাকাছি কোনো একটি স্থানে শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছিলেন।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল যে তিনি বাংলাদেশ থেকে প্রথমে আজারবাইজানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ইরান, তুরস্ক, গ্রিস, মেসিডোনিয়া হয়ে সার্বিয়াতে ঢুকেছেন।

সার্বিয়াতে আসার পর তার লক্ষ্য ছিল হাঙ্গেরি কিংবা ক্রোয়েশিয়া হয়ে স্লোভেনিয়ার ভেতর দিয়ে ইতালিতে যাওয়া৷ কীভাবে তিনি ইতালি যাবেন?— এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের দালাল আছে এখানে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার চুক্তির মাধ্যমে দালালদের সহায়তায় হাঙ্গেরি কিংবা ক্রোয়েশিয়া পৌঁছানোর পর সেখানে দালালদের আগে থেকেই নির্ধারিত গাড়িতে করে ইতালিতে যাওয়া যায়। এর জন্য রুট ভেদে বিভিন্ন রকম প্যাকেজ আছে। সেক্ষেত্রে টাকার অংকের হেরফের হয়।’

‘সাধারণত ২ হাজার থেকে ৬ হাজার ইউরো দালালকে দিতে হয়। যাত্রাপথের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেঁটে বর্ডার পার হতে কয়েকদিন লাগে। পানি ও কয়েকদিনের শুকনো খাবার সঙ্গে নিয়ে রাজা-বাদশাহদের রাজ্য জয়ের মত সীমান্ত জয় করতে হয়। জঙ্গলেই রাত কাটাই।’

‘এত কষ্ট করে সীমান্তে পৌঁছানোর পর সীমান্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তারা ফেরত পাঠায়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢুকতে পারে। কেউবা কয়েকবার চেষ্টার পর অবশেষে সফল হয়। অনেকে পথে মারাও যায়।’

সার্বিয়া কিংবা ক্রোয়েশিয়া অথবা হাঙ্গেরিতে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। আরও জানান, তার এক ভাই সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে উত্তর (তুর্কি) সাইপ্রাসে গিয়েছেন। তারও উদ্দেশ্য সেখান থেকে পরবর্তীতে কোনো এক সময় দক্ষিণ (গ্রিক) সাইপ্রাস হয়ে ইউরোপে যাওয়া।

বলকান ও উত্তর সাইপ্রাসের এ রুট দুটি বর্তমানে ইউরোপে প্রবেশদ্বার হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ থেকে নাকি এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে অনেকে উত্তর সাইপ্রাসে লোক পাঠাচ্ছে।

ক্যাম্পে বসবাসের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পে তেমন কোনো সুবিধা নেই। সামান্য কয়েক বর্গফুটের তাঁবুর মধ্যে তাদেরকে রাত কাটাতে হয়। রাতে ঠাণ্ডা বাতাস থেকে বাঁচার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও খাদ্য সমস্যা তো আছেই।’

তবে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ আফগান ও পাকিস্তানি শরণার্থীদের দ্বারা তাদের অনেককে মাঝে-মধ্যে ছিনতাই-চাঁদাবজির শিকার হতে হয়। টাকা না দিলে তারা অনেককে ছুরিকাঘাত করে আহত করে।

এছাড়াও, সার্বিয়ার পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন সময় তাদের অনেককে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া কিংবা হাঙ্গেরি ইউরোপের এ সব দেশে রেসিজম সমস্যা আছে।’ তাকেও স্থানীয় অনেক অধিবাসীদের থেকে মাঝেমধ্যে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সবশেষ তিনি আমাদেরকে জানান, সার্বিয়া মূলত বলকান রুটের মধ্য দিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও একই সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে গঠিত কমন বর্ডার ফ্রেম অর্থাৎ সেনজেনের অন্তর্ভুক্ত কোনো রাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের কেন্দ্রবিন্দু।

বাংলাদেশ থেকে শুরু করে এশিয়া কিংবা এ অঞ্চলের স্থানীয় অনেকে এই মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত। এটি একটি সুবিশাল নেটওয়ার্ক, যার জাল বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে। প্রতিদিন শত শত কোটি টাকার ব্যবসা হয় এ রুটে।

দুর্বল সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো, আইনের শাসনের অভাব ও স্থানীয় প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে সার্বিয়া, মেসিডোনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো, মন্টিনিগ্রো, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা মানবপাচারের এক অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে উঠেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ফলে বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ইতালি সম্প্রতি কৃষিসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কাজ করা ১২ লাখ অবৈধ অভিবাসীদেরকে বৈধ করার ঘোষণা দিয়েছে। স্পেন ও ফ্রান্সের পার্লামেন্টে দেশটিতে বসবাস করা অবৈধ অভিবাসীদেরকে বৈধ করার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

এই ইস্যুকে পুঁজি করে অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশের বিভিন্ন রুটে মানবপাচার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যেতে পারে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মত দিয়েছেন। তাই এ মুহূর্তে আমাদের উচিৎ এ বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা ও যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণ করা।

রাকিব হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago