শিলাবৃষ্টিতে সবজি-বীজ ক্ষেতের ক্ষতি
চারদিনের শিলাবৃষ্টিতে লালমনিরহাট সদর ও আদিতমারী উপজেলায় ২০টি গ্রামে সবজি-বীজ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সবজি-বীজ উৎপাদনকারী চাষিরা এখন লাভের পরিবর্তে লোকসানের মুখে পড়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
কোনো চাষির এক তৃতীয়াংশ, কারো এক চতুর্থাংশ আবার কারো কারো অর্ধেক জমির সবজি-বীজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব গ্রামের চাষিরা গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন প্রকারের হাইব্রিড সবজি-বীজ উৎপন্ন করে লাভবান ও স্বাবলম্বী হয়েছেন।
বিভিন্ন বীজ কোম্পানির কাছে সহায়তা নিয়ে ও কোম্পানির কাছে ন্যায্য মূল্যে সবজি-বীজ বিক্রি করে তারা আশানুরূপ লাভবান হয়েছিলেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, জেলায় এক হাজারের বেশি কৃষক প্রায় ৫০০ একরের বেশি জমিতে হাইব্রিড সবজি-বীজ উৎপন্ন করছে বীজ কোম্পানির সহায়তায়।
কৃষকরা করল্যা, মরিচ, বেগুন, টমেটো, লাউ, ঝিঙা, কপি, শসা ও বিভিন্ন শাকের বীজ উৎপাদন করেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার সবজি-বীজ উৎপাদনকারী কৃষক বেলাল হোসেন (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ক্ষেত থেকে সবজি-বীজ ঘরে তোলার মুহূর্তে পরপর চারদিন শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’
তার তিন বিঘা জমির করল্যা ও মরিচের বীজের এক চতুর্থাংশ শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বাকি অংশ থেকে আশানুরূপ ফলন আসবে না।
একই গ্রামের কৃষক তারামোহন বর্মণ (৬৫) বলেন, ‘চার বিঘা জমির লাউ, করল্যা ও ঝিঙা বীজ ক্ষেতের অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ বছর লাভ আসবে না। বরং আসল তুলতে হিমশিম খেতে হবে।’
সদর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের কৃষক ফজর আলী (৬০) বলেন, ‘হঠাৎ পরপর চারদিন শিলাবৃষ্টি হবে এটা আমাদের ভাবনার বাইরে ছিল। শিলাবৃষ্টির কারণে এ বছর সবজি-বীজের ফলন আশানুরূপ হচ্ছে না। এ কারনে লোকসানে পড়তে হচ্ছে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এনামুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দূর্যোগের ওপর কারো হাত নেই। শিলাবৃষ্টিতে সবজি-বীজ ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। তারপরও কৃষকরা সবজি-বীজ উৎপাদনে কিছুটা হলেও লাভবান হবেন। কারণ বীজ কোম্পানিগুলো সাধারণত ন্যায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে বীজ কিনে থাকে।’
Comments