সামনে অন্ধকার: আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

সারা দেশে জনসাধারণের চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকার যদি সকলের শারীরিক দূরত্ব ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে সামনে দেশ আরও অন্ধকার দিন দেখতে পাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. মোজাহেরুল হক বলেন, ‘ঈদ-উল-ফিতরের আগে ও পরে শাটডাউন শিথিল করার কারণে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।’

তিনি বলেন, গত ১৪ দিনে করোনাভাইরাসে সংক্রামিত মানুষের সংখ্যা মারাত্মক ভাবে বেড়েছে। কারণ, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত হয়েছে।

দেশে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৫৩৪ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে গত দুসপ্তাহে শনাক্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৬৬৪ জন, যা মোট শনাক্তের অর্ধেকেরও বেশি।

বাকিরা শনাক্ত হয়েছেন ৮ মার্চ থেকে ১৮ মে এর মধ্যে।

গতকাল দুপুর আড়াইটার স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৮১ জন এবং মারা গেছেন ২২ জন।

২৫ মে উদযাপিত ঈদের আগে সরকার ঘোষণা দেয় দেড় মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকা শপিংমলগুলো সীমিত আকারে খুলতে পারবে।

এই ঘোষণার পরও বেশিরভাগ শপিংমল বন্ধ ছিল। তবে অনেকেই দোকান খুলেছেন এবং সেখানে ক্রেতা সমাগম হয়েছে।

ঈদ উদযাপন করতে হাজার হাজার মানুষ ঈদের আগে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাজধানী ছেড়েছে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরা রোধে সরকার চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা উপেক্ষা করেই মানুষ ঘরমুখি হয়।

অধ্যাপক মোজাহেরুল বলেন, জনগণের এ জাতীয় চলাচলের কারণে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ‘দেশ এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণে গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’

২৮ মে সরকার ঘোষণা করে, করোনাভাইরাসের কারণে চলমান ছুটি বর্ধিত করা হবে না। এমন ঘোষণায় সামাজিক দূরত্বের দিকনির্দেশনা অগ্রাহ্য করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই কাজে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরে আসে হাজারো মানুষ। একই দিন, সরকারের কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা কমিটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ব্যবস্থা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা না হলে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়বে।

১৭ সদস্যের কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংক্রমণ প্রতিরোধের নিয়মের কঠোর প্রয়োগ করার আগে লকডাউন তুলে নেওয়া হলে পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়বে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করবে।’

গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহও স্বীকার করেছেন যে ঈদের আগে ও পরে মানুষের অতিরিক্ত চলাচলের ফল হিসেবেই সম্প্রতি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিশু বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি ডা. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এছাড়াও আরেকটি কারণ, জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব। আমরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় না রেখে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখছি। এটি নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে।’

তিনি বলেন, আগামী দিনে যদি মানুষ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুসরণ করে চলে তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে।

Comments

The Daily Star  | English

RMG export to USA grows 14% in FY25

Bangladesh shipped $7.54 billion worth of apparel to the US in the last fiscal year

9m ago