দিনাজপুর ল্যাবে নমুনার জটে ঠাকুরগাঁওয়ের করোনা রিপোর্ট পেতে বিলম্ব

দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষায় অতিরিক্ত চাপের কারণে ঠাকুরগাঁও থেকে পাঠানো নমুনার ফলাফল পেতে দেরি হচ্ছে।

দিনাজপুরে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষায় অতিরিক্ত চাপের কারণে ঠাকুরগাঁও থেকে পাঠানো নমুনার ফলাফল পেতে দেরি হচ্ছে।

গত ৩১ মে হতে ঠাকুরগাঁও থেকে পাঠানো ২৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত পাঠানো নমুনার রিপোর্ট এসেছে ১ জুন। গতকাল বুধবার শেষ ৯৩ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এই জেলায় সংগ্রহ করা হয়েছিল ৬৩ জনের নমুনা। কিন্তু ল্যাবে জট থাকায় নমুনা নেওয়ার জন্য দিনাজপুর থেকে গাড়ি পাঠানো হয়নি।

ঠাকুরগাঁও থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট এক হাজার ৮৩৩ জনের মধ্যে এক হাজার ৫৪৪ জনের পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে । এ পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্টে ১২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন । এদের মধ্যে ৩৪ জন ইতোমধ্যে সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে দুই জনের।

আক্রান্তদের মধ্যে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ৩৪ জন, সদরে ৩২ জন,হরিপুরে ২৩ জন,পীরগঞ্জে ২১ জন ও রানীশংকৈলে ১২ জন রয়েছেন।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১১ এপ্রিল। এরপর সংখ্যাটি ৫০ অতিক্রম করতে ৪১ দিন সময় নেয়। মাত্র আট দিনে গত ৩০ মে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৯। ১ জুন পাওয়া রিপোর্টে এ দাঁড়িয়েছে ১২২ জন।

সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শুরুর দিকে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকায় আইইডিসিআর ল্যাবে এবং তারপর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হতো। পরে গত ২৬ এপ্রিল দিনাজপুরে মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার সুবিধা চালু হওয়ায় সেখানে নমুনা পাঠানো হচ্ছে। দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও ছাড়াও পঞ্চগড়, নীলফামারীর নমুনার পরীক্ষা হচ্ছে ওখানে।

দিনাজপুরের মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান যোগেন্দ্র নাথ সরকার জানান, সেখানে প্রতিদিন দুই ধাপে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। প্রতি পর্বে পরীক্ষা হয় ৯৪টি। ল্যাবে ৯৯২টি নমুনা জমা রয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। তার ওপর আবার নতুন করে নমুনা এসেছে। নমুনার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষার ফলাফল জানাতে সময় লেগে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, টেস্ট রিপোর্ট পেতে গড়ে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগছে। এতে আক্রান্তদের আইসোলেশন নিশ্চিত করতে না পারায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

দিনাজপুরে করোনা পরীক্ষায় অসুবিধা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁওয়ের এমপি রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি । চার জেলার জন্য একটি ল্যাব হওয়ায় পরীক্ষা করতে সময় লাগছে । দ্রুত একটি ল্যাব এখানে স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

Comments