ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তার অবস্থার একটু অবনতি হয়েছিল।
আজ শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. তানভীর চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এইমাত্র ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দেখে রুম থেকে বের হলাম। এখন তার ৬-৭ লিটার অক্সিজেন লাগছে। শ্বাসকষ্ট আছে। তার অবস্থাকে আমরা সম্পূর্ণ আশঙ্কাজনক বলছি না। তবে, আশঙ্কামুক্তও নন। তার দুটি ফুসফুসই আক্রান্ত হয়েছে। এটি ঠিক নিউমোনিয়া নয়, এর আগের পর্যায় বলা যায়। আজকে তার বুকের এক্স-রে রিপোর্টও ভালো আসেনি। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।’
এর আগে, সকাল ১১টার দিকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দেখেছেন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার অধ্যাপক ডা. মামুন মুস্তাফি। দুপুর ১টার দিকে ডা. মামুনের উদ্ধৃতি দিয়ে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘আগে থেকেই ডা. জাফরুল্লাহর ফুসফুসে সমস্যা ছিল। কিডনি সমস্যা তো আছেই। করোনায় আক্রান্ত হলে ফুসফুসও আক্রান্ত হয়ে নিউমোনিয়ার দিকে যায়। বর্তমানে তার ফুসফুস কিছুটা আক্রান্ত। তবে সেটা পুরোপুরি নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়নি। বর্তমানে তাকে সম্পূর্ণরূপে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত তিনি অক্সিজেন ছাড়াই ছিলেন। গতরাতের তুলনায় এখন তার অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে, স্থিতিশীল নয়। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।’
সকাল ১১টা ২০ মিনিটে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলা যাবে না। তবে, তার শারীরিক অবস্থা সম্পূর্ণ স্থিতিশীল নয়, ‘ওঠা-নামা’ করছে।
আজ সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি চিকিৎসার অংশ হিসেবে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয় এবং তিনি করোনায়ও আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল যখন তার কিডনি ডায়ালাইসিস শুরু হয়, সে সময় শারীরিক অবস্থার কারণে ডায়ালাইসিস সম্পন্ন করা যায়নি। বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন। তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়েছে, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্য সকলে দোয়া করবেন। উনার শরীর ভালো না। রাতে উনার শ্বাসকষ্ট ছিল। আপনাদের সকলের দোয়া খুব প্রয়োজন।’
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে পরীক্ষাতেই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিসিআর পরীক্ষাতেও তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ডা. জাফরুল্লাহর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরেই তার স্ত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীরও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
আরও পড়ুন:
‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো, সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবস্থা ‘স্থিতিশীল’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত
প্লাজমা থেরাপি নিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’
আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন
Comments