আম পরিবহনে নতুন ট্রেন ‘ম্যাংগো স্পেশাল’
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/train_7.jpg?itok=8h61KaxO×tamp=1591366107)
ঢাকায় কম খরচে আম পরিবহনে আজ থেকে চালু হলো ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ নামে একটি নতুন ট্রেন। করোনা পরিস্থিতিতে আম পরিবহন সংকট কাটাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে নতুন এই ট্রেন চালু করেছে। পণ্য পরিবহনে রেলওয়ের স্বাভাবিক মূল্যহার থেকে এই ট্রেনের মূল্যহার অর্ধেক করা হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো নাসির উদ্দিন জানান, বিকেল চার টায় ট্রেনটি প্রায় এক দশমিক ৬৪ টন আম নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে যায়। বিকেল ৫ টা ২০ মিনিটে রাজশাহী ছেড়ে যাবার সময় অন্তত ছয় টন আম বুকিং হয়েছিল।
মো নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ট্রেনটিতে যুক্ত পাঁচটি মালবাহী কোচের প্রতিটিতে অন্তত ৪৫ টন আম পরিবহন করা যাবে। প্রতি কেজি আম বুকিং করতে খরচ হবে সর্বোচ্চ ১.৩০ টাকা। পণ্য পরিবহনে রেলওয়ের স্বাভাবিক মূল্য ছিল প্রতি কেজি তিন টাকা।’
নতুন ট্রেন চালু হওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন আমচাষীরা। তারা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহন সংকটে আমের বাজারজাতকরণ নিয়ে চাষীরা ভেঙে পরেছিলেন। খারাপ আবহাওয়া ও মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাতের কারণে আমের উৎপাদন এবার কম হয়েছে। তারপর এ অঞ্চলের আম বাগানগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানসহ দুটি ঝড়ে অন্তত ১০ শতাংশ আম ঝরে গেছে। তাই পরিবহন সংকটে আম ব্যবসা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম সবাই।’
তবে, নতুন ট্রেন তাদের কষ্ট কমাবে সহায়তা করবে বলে জানান তারা।
রাজশাহী নিরাপদ আম উৎপাদনকারী সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল হক বলেন, ‘ট্রেনটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ।’
তিনি নিজেও এক টন আম পাঠিয়েছেন। সাধারণত ট্রাকে করে আম পাঠাতে কেজিতে ছয় টাকা এবং কুরিয়ারে কেজিতে ১৬ টাকা দরে ঢাকায় আম পাঠাতেন। কিন্তু, নতুন ট্রেনে আম পাঠাতে কুলি খরচসহ দুই টাকার বেশি খরচ হবে না বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ট্রেনে অনেক নিরাপদে আম যাবে। বুকিং করতেও কোন ঝামেলা নেই।’
তবে, শহর থেকে দূরের চাষিদের খুব একটা লাভ হবে না এই ট্রেনে। বাঘার আম উৎপাদনকারী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাকে করে বিপুল পরিমাণ আম স্টেশনে বুকিং করতে নিয়ে যেতে যে খরচ হবে, ভাড়া করা প্রাইভেট ট্রাকে আম ঢাকায় নিয়ে যেতেও একই খরচ পড়ে। ট্রেনে বিপুল পরিমাণ আম পরিবহনের সক্ষমতা থাকলেও, আমরা বাড়তি খরচ এড়াতে ট্রেনে করে আম পাঠাতে যাব না।’
রেলওয়ে কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকেল চার টায় ছেড়ে ট্রেনটি সপ্তাহের প্রতিদিন আমনুরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ রোড, আড়ানী, আব্দুলপুর, টাংগাইল, মির্জাপুর, হাইটেক সিটি, জয়দেবপুর, টঙ্গি, ঢাকা বিমান বন্দর, ঢাকা
ক্যান্টনমেন্ট ও তেজগাঁও স্টেশনে বিরতি দিয়ে পরদিন রাত এক টায় পৌঁছাবে। ঢাকা থেকে আবার রাত দুইটা ১৫ মিনিটে রওনা দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ১০ টায়। আম পরিবহনের জন্য চালু হলেও, ট্রেনটি অন্যান্য কৃষিপণ্য ও অন্য যে কোনো বৈধ পণ্য পরিবহন করবে একই খরচে। পণ্য গন্তব্যে পৌঁছানোর পর, প্রাপক সংশ্লিষ্ট স্টেশনের পার্সেল বিভাগ থেকে পণ্য খালাশ করিয়ে নিবে।’
‘এই অঞ্চলের আমের প্রসারের জন্যই ট্রেনটির নামকরণে আম শব্দটি রাখা হয়েছে। কিন্তু, এটি মূলত পণ্যবাহী ট্রেন যেখানে যে কোনো কৃষিপণ্য প্রাধান্য পাবে,’ যোগ করেন তিনি।
নতুন কোনো নির্দেশনা না এলে ট্রেনটি সারা বছর ধরেই চলবে বলেও জানান নাসির উদ্দিন।
Comments