করোনা আর ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্থ সুফিয়ার দিন কাটছে শূন্য ভিটায়
একদিকে করোনা আতঙ্ক, দিনমজুর ছেলের রোজগার নেই, অভাব অনটন সংসারে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে নড়বড়ে ঘর, কালবৈশাখীতে উড়িয়ে নিয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে সত্তর বছরের সুফিয়া বেগম এখন শূন্য ভিটাতেই পরিজন নিয়ে অনিশ্চিয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
সুফিয়া বেগমের বাড়ি পটুয়াখালীর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বহালগাছিয়া গ্রামে। তার স্বামী সেকান্দার আলী অনেক বছর আগেই মারা গেছেন।
একমাত্র সন্তান বশির, ছেলে বৌ আর নাতি-নাতনি নিয়ে থাকেন। গ্রামে মানুষের বাড়িতে কাজ করে ছোট একটি টিনের ঘর তুলেছিলেন, ওই তার সম্বল।
আজ শনিবার বহালগাছিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সুফিয়া বেগমের বসত ঘরটি উড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে ফেলায় শূন্যভিটা পড়ে আছে। সুফিয়া বেগম, ছেলে বশির ও ছেলে বৌ নিলুফা বেগম ঝড়ে উড়িয়ে নেওয়া ঘরের টিন, কাঠ কুড়িয়ে জড়ো করছেন।
সুফিয়া বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে একমাত্র সম্বল ৯ শতাংশ জমিতে একটি ঘর তুলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়। ছেলেকে বড় করেছি, বিয়ে দিয়েছি, নাতি-নাতনি নিয়ে কোনরকমে দিন কাটছিল। কিন্তু করোনার কারণে আর পরে ঘূর্ণিঝড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচেই এখন তার ঠিকানা।
সুফিযা বেগম জানান, গত দুইদিন ধরে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে উড়িয়ে নেওয়া ঘরের মালামাল কুড়িয়ে আনছেন। রাতে এলাকার একটি বাড়ির বারান্দায় রাত কাটছে। কীভাবে এখন দিন কাটবে এ নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে এই বৃদ্ধা।
সুফিয়া বেগমের ছেলে বশির জানান, গ্রামে একটি দোকানে অটোরিকশা মেরামতের কাজ করতেন তিনি। করোনার কারণে কাজ বন্ধ। এখন খুললেও লোকজন তেমন আসে না।
তিনি বলেন, ধারদেনা করে বসত ঘর মেরামতের কাজ শুরু করি গত মঙ্গলবার সকালে, সেদিনই বিকেলে কালবৈশাখী ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো বেল্লাল ফকির বলেন, বন্যার পর ইউপি কার্যালয় থেকে কিছু খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তানভির আহমেদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়াও যাদের জমি আছে, ঘর নেই, সেই সব পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটি প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় যাদের ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে তাদের জন্য ঘর বরাদ্দের চেষ্টা করা হবে।
Comments