ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘কিছুটা উন্নতি’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত তিন দিনে তার শারীরিক অবস্থার আর অবনতি হয়নি।
আজ সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার অধ্যাপক ডা. মামুন মুস্তাফি ও অধ্যাপক ডা. নজীবের উদ্ধৃতি দিয়ে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আজকেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার আর অবনতি হয়নি। স্থিতিশীল অবস্থাই আছে। যেহেতু তার দুটি ফুসফুসের অবস্থাই খারাপ, সেজন্য প্রয়োজনীয় সব ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এবং তিনি সেই ওষুধ গ্রহণ করতে পারছেন। তাই গত তিন দিনে তার পরিস্থিতির আর অবনতি হয়নি। সেই বিবেচনায় বলা যায় তার অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে।’
ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার বলেন, ‘তবে, তার ফুসফুস কোভিড নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় এখনো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ক্ষেত্রে আরেকটি ইতিবাচক দিক যে প্রতিদিন তার কিডনি ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে এবং তার শরীর সেটা গ্রহণ করতে পারছে। যেসব ওষুধ তিনি খাচ্ছেন, যদি কোনো কারণে তার ডায়ালাইসিস করা না যেত, তাহলে তার পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।’
‘গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে থাকায় আরও কিছু বাড়তি সুবিধা হয়েছে। যেমন: নিয়মিত তাকে ফিজিও থেরাপি দেওয়া যাচ্ছে। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ফিজিও থেরাপির খুব ভালো ব্যবস্থা আছে। এটা একটা বাড়তি সুবিধা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে গতকাল আবারও তার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই পরীক্ষায় দেখা গেছে, তার শরীরে খুব অল্প পরিমাণ করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে। আগামী ১০ জুন অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে আবারও তার করোনা পরীক্ষা করা হবে। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, সেই দিন হয়তো পুরোপুরি করোনামুক্ত ফল পাওয়া যেতে পারে। ইতোপূর্বে তার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, তার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যাটিবডি তৈরি হয়েছে’, যোগ করেন ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার।
তিনি আরও বলেন, ‘পিসিআর পরীক্ষার জন্য আজ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নমুনা সংগ্রহ করতে এসেছিল। কিন্তু, তিনি বলেছেন, “আগে ১০ জুন আমাদের (গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের) অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে পরীক্ষা করবো। তারপর ওইদিনই পিসিআর পরীক্ষার জন্য নমুনা দেবো।” তাই পিসিআর পরীক্ষার জন্য আজ তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।’
এর আগে, গত ৪ জুন যখন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস শুরু হয়, সে সময় শারীরিক অবস্থার কারণে ডায়ালাইসিস সম্পন্ন করা যায়নি। যে কারণে তার শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’ হয়। ওইদিন তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল।
৫ জুন সারাদিনই তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। ওই দিন রাতে তৃতীয়বারের মতো তাকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তার কিডনি ডায়ালাইসিসও ভালোভাবে সম্পন্ন করা গেছে। ৫ জুনের তুলনায় পরের দিন (৬ জুন) ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল। ওই দিনও তার কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
সর্বশেষ গতকাল বিকালেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে পরীক্ষাতেই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিসিআর পরীক্ষাতেও তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা শনাক্ত হওয়ার পরেই তার স্ত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীরও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
আরও পড়ুন:
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আবারও প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন দিতে হচ্ছে
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’
‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো, সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’
আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন
Comments