চট্টগ্রামের ৪ প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে অক্সিজেনের সংকট

ছবি: স্টার

অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করলেও চার প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে চট্টগ্রামে অক্সিজেনের সংকট তৈরি হয়েছে।

অক্সিজেন সংকট খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অনুসন্ধাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ, হাসান ট্রেডার্স, জিলানী অক্সিজেন লিমিটেড ও মেসার্স ব্রাদার্স। এরমধ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডারে টেম্বারিংয়ের কারণে বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এসি ল্যান্ড) তৌহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘চারটি প্রতিষ্ঠানের মজুদদারির কারণে হঠাৎ করে চট্টগ্রামে অক্সিজেন সংকট তৈরি হয়েছে। বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ, হাসান ট্রেডার্স, জিলানী অক্সিজেন লিমিটেড ও মেসার্স ব্রাদার্স- এসব প্রতিষ্ঠান সীতাকুন্ডের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেডের অক্সিজেন সংগ্রহ করে। পরে তারা এগুলো মেডিকেল গ্রেডের অক্সিজেন হিসেবে চড়া দামে বিক্রি করে আসছে।’

মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘লিন্ডে বাংলাদেশের’ সিল বসিয়ে সেগুলো হাসপাতালসহ অন্যান্য জায়গায় এই চার প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে আসছিল বলে জানান তৌহিদ।

‘যখন অক্সিজেনের তীব্র চাহিদা দেখা দেয়, তখন তারা এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে বাজারে অক্সিজেনের কৃত্রিম সংকট দেখায়। পরে প্রতি সিলিন্ডার ১৫ থেকে এমনকি ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছিল’, যোগ করেন তিনি।

তৌহিদ বলেন, ‘আমরা মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন প্রস্তুতকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বাংলাদেশের কারখানা পরিদর্শন করে জেনেছি অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই। চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন উৎপাদন অব্যাহত আছে।’

‘সেখানে দেখা গেছে ১ দশমিক ৬ কিউবিক লিটারের একটি সিলিন্ডার রিফিল করতে খরচ হয় ১২২ টাকা। কিন্তু, এসব প্রতিষ্ঠান ১২২ টাকার পরিবর্তে নিচ্ছে এক হাজার টাকা। এ কারণে, বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজকে চার লাখ টাকা ও মেসার্স ব্রাদার্সকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত’, বলেন তিনি।

মেসার্স ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক ইমাম উদ্দিন এ অভিযোগ অস্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট এসে কোনো কথা না শুনে জরিমানা করেছে। আমরা প্রতিটি সিলিন্ডার দশ থেকে এগার হাজার টাকায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কিনি। বিক্রি করি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকায়। আর চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে।’

প্রায়ই একই বক্তব্য হাসান ট্রেডার্স, বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ ও জিলানী অক্সিজেন লিমিটেড কর্তৃপক্ষের।

তবে, ডিলারদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সীতাকুন্ড উপজেলার অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘জিরি সুবেদারের’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হাকিম বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কম দামে নিয়ে গিয়ে তারা বাজারে নৈরাজ্য তৈরি করছে। অক্সিজেনের সর্বোচ্চ বড় সিলিন্ডার ৯ দশমিক ৬ কিউবিট লিটার যা আমরা দশ হাজার টাকায় বিক্রি করি। আর এগুলো তারা এখন কমপক্ষে এক লাখ টাকায় বিক্রি করছে।’

Comments

The Daily Star  | English
NID cards of Sheikh Hasina and family locked

NIDs of Hasina, 9 family members 'locked'

The NIDs of the 10 listed individuals were locked through an official letter on April 16

30m ago