ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আপডেট

‘উন্নতি হচ্ছে, তবে এখনো ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আজ শুক্রবার দুপুরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মামুন মুস্তাফি দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সার্বিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে। বর্তমানে দিনের বেশিরভাগ সময়ই তাকে অক্সিজেন দেওয়া লাগছে না। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’

এর আগে, আজ সকালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফরহাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ বেশ সকালে ঘুম থেকে উঠেছেন। নিজে থেকে নাশতা করেছেন। তার প্রিয় খাবার আমসত্ত্ব খেতে চেয়েছেন। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেছেন। তাকে দেখে গতকাল রাতের চেয়েও ভালো মনে হয়েছে।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার যে উন্নতি হচ্ছে, এটা কিসের ভিত্তিকে বলা হচ্ছে?— জানতে চাইলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে মো. ফরহাদ বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সর্বশেষ যে এক্স-রে রিপোর্ট, তাতে তার ফুসফুসের উন্নতি দেখা গেছে। নিউমোনিয়া থেকে তার ফুসফুসে যে ইনফেকশন, তা পর্যায়ক্রমে ধীর গতিতে ভালো হয়ে উঠছে। এর ভিত্তিতেই বলা হচ্ছে যে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’

‘যদিও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ক্ষেত্রে এখনই বলে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই যে তিনি সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত। কারণ ফুসফুস নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও তার আরও বেশ কয়েকটি শারীরিক অসুস্থতা আছে। তার বয়স ৭৯ বছর। এটি একটি কারণ। তার কিডনির প্রকট সমস্যা ও রক্তচাপ আছে। এ ছাড়াও, তিনি তো করোনায় আক্রান্ত। সেই কারণে আমরা বলতে পারি, তার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু, তিনি এখনো ঝুঁকিমুক্ত নন’, বলেন তিনি।

মো. ফরহাদ বলেন, ‘প্রথম অ্যান্টিজেন টেস্টে দেখা গিয়েছিল, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাসের মাত্রা কমে যাচ্ছে। তিন দিন পরে আবারো টেস্ট করা হয়েছে। সেই টেস্টে দেখা গেছে, তার শরীরে করোনাভাইরাসের মাত্রা আরও কমেছে। কিন্তু, একেবারে দূর হয়ে যায়নি। যখন তিনি সম্পূর্ণরূপে করোনামুক্ত হবেন, তখনই তার ব্যাপারে আমরা আরও ভালোভাবে মন্তব্য করতে পারেবো। তবে, এটা খুবই ইতিবাচক দিক যে তিনি নিজে থেকে পছন্দের খাবার খেতে চাচ্ছেন। কারণ, করোনা রোগীর মুখের স্বাদ চলে যায় বলে তারা সাধারণত খাবার গ্রহণ করতে পারে না।’

‘গলায় ব্যথা থাকার কারণে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কথা কম বলছেন এবং চিকিৎসকরাও তাকে কথা কম বলতে বলেছেন। যে কারণে প্রতিনিয়ত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালসহ বাইরের আরও যে বিষয়গুলো নিয়ে তিনি চিন্তা করছেন, চিরকুটের মাধ্যমে লিখে সেগুলোর ব্যাপারে চিকিৎসক, নার্সদের কাছে জানতে চাচ্ছেন। চিরকুটে লিখে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের অনুমোদনের সর্বশেষ অবস্থা ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের শারীরিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি চিরকুটের মাধ্যমেই সবাইকে বিভিন্ন কাজের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। যেমন: সাধারণ মানুষের জন্য নগর হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবে জরুরি ভিত্তিতে প্লাজমা কালেকশন মেশিন বসাতে বলেছেন’, যোগ করেন মো. ফরহাদ।

বর্তমানে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বিত বোর্ডের মাধ্যমে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিকিৎসা চলছে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে পরীক্ষাতেই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিসিআর পরীক্ষাতেও তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা শনাক্ত হওয়ার পরেই তার স্ত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীরও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

আরও পড়ুন:

বিকালের এক্সরে রিপোর্টে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ফুসফুসের আরও একটু উন্নতি

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ফুসফুসের নিউমোনিয়ার ‘উন্নতি হচ্ছে’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি, ফুসফুসের সংক্রমণ কমেছে

‘অবনতি হয়নি অর্থে উন্নতি হয়েছে’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘কিছুটা উন্নতি’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আবারও প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন দিতে হচ্ছে

‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো, সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে’

‘আমি ভালো আছি’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ

বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’

আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন

২৫ দিনে ৩০১ শয্যার করোনা হাসপাতালের জন্ম অথবা অপমৃত্যু!

মুক্তিযুদ্ধ, গণস্বাস্থ্য, ডা. জাফরুল্লাহ ও মাছ চোর

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

3h ago