জাবির প্রীতিলতা হলের ১৭ কক্ষে চুরি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের প্রায় ১৭টি কক্ষে চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট আয়শা সিদ্দিকা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে হল কর্তৃপক্ষ। যদিও সংশ্লিষ্ট রুমের শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আজ জানানো হয়।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ দুপুরে হলের ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আমরা চুরি হওয়ার তথ্য জানতে পারি। তখনই প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে ক্ষতির পরিমাণ ও কীভাবে চুরি হয়েছে জানতে চাইলে, তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এমনকি হলে ফেরার অনুমতিও দেননি।’
হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার নিয়মিত পর্যবেক্ষণেও চুরির বিষয়টি জানা যায়নি। তবে, শুক্রবার সকালে হলের ‘এ’ ব্লকের ২০১, ২০৩, ২১১, ২১৬, ২১৭, ৩০১ ও ৩০৫ এবং ‘বি’ ব্লকের ১১৩, ২০২, ২১২, ২১৩, ২২২, ৩০৯, ৪০৩, ৪১২ ও৪২১ নম্বর কক্ষসহ একটি স্টোর রুমের দরজার তালা ভেঙে চুরির বিষয়টি জানা গেছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকাতেও এমন ঘটনা ঘটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দুই জন হল সুপার এবং দিবারাত্রী প্রহরী উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও একটি আবাসিক হলের ১৭ টি কক্ষের তালা ভেঙে চুরির ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। অল্প কিছুদিন বাড়িতে থাকবো ভেবে ল্যাপটপসহ গূরুত্বপূর্ণ জিনিস হলে রেখে এসেছিলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসি টিভির ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা হল থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করেও জিনিসপত্র হলে রাখতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, হলে প্রবেশ করতে না দিয়ে জিনিসপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা হল প্রশাসনের চরম অব্যবস্থাপনার লক্ষণ।
এ বিষয়ে প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই পুরো হল চেকিং করি। বৃহস্পতিবার রাতেও আমরা চেক করেছি। রাত ১২টার পর কোনো এক সময় চুরির ঘটনাটি ঘটতে পারে। চুরি যাওয়া রুমগুলোতে ছোটো লকারের তালার মতো তালা লাগানো ছিলো। যার কারণে হয়তো সহজেই চুরি করতে পেরেছে। আর তিন তলার কোনো এক রুমে বিছানার উপর ল্যাপটপ রাখা ছিলো। সেটা তেমনই আছে, চোর নেয়নি। তাই আশা করছি বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়তো হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘হলটির চার জন প্রহরী বর্তমানে লকডাউনে আটকে আছেন। যে কয়জন আছেন তাদের দিয়ে অতিরিক্ত ডিউটি করানো হচ্ছে। এরপরেও চুরি ঘটনা খুব দুঃখজনক। হল প্রশাসনের মিটিং হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করা হয়েছে। আর ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিবেচনা করবে।’
Comments