ঠাকুরগাঁওয়ে চুরির অপবাদে দুই শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
ঠাকুরগাঁওয়ে মোবাইল চুরির অপবাদ নিয়ে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করার মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত জিয়াবুল ইসলাম ওই মামলার ছয় নম্বর আসামি। তাকে আজ শনিবার সন্ধ্যায় জেলার পীরগঞ্জের সেনগাঁও ইউনিয়নের দেওধা গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় একজন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে উপপরিদর্শক রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে জিয়াবুলকে গ্রেপ্তার করে।’
তিনি বলেন, ‘গত ২২ মে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে শালিসের নামে সুমন (১৩) ও করিমুল (১৬) নামের দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলামসহ তার সহযোগীরা। তারা ওই নির্যাতনের ভিডিও চিত্রও ধারণ করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে তারা মোবাইল ফোনের দাম বাবদ পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে সুমনের মা শরিফা বেগমের কাছে। সে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, তাকেও নির্যাতন করা হয় এবং তিনদিন পর তার বাড়ি থেকে একটি গরু জোরপূর্বক ইউপি মেম্বারের লোকজন নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেয়।’
এরপর, গত ৫ জুন ইউপি সদস্য জহিরুলসহ সাত জনকে আসামি করে শরিফা বেগম পীরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, পীরগঞ্জ উপজেলার সেনগাঁও ইউনিয়নের দেওধা গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব আলী তার প্রতিবেশী গৃহবধূ শরিফা খাতুন (৩৫) কে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তাতে সাড়া না দেওয়ায় ওই গৃহবধূসহ পরিবারকে হেনস্তা করতে গত ২২ মে শরিফার ছেলে সুমন ও তার স্বামীর বড় ভাইয়ের ছেলে করিমুল ইসলামকে মোবাইল চুরির অপবাদ দেয় মোতালেব আলী। বিচারের নামে ওই দুই শিশুকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং হাত-পা বেঁধে তাদের মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে পেটায় ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা।
মামলার সাতদিনেও আসামি গ্রেপ্তারর না হওয়ায়, আজ বিষয়টি জানার পর পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান ডিবি পুলিশকে আসামি গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সন্ধ্যায় একজন গ্রেপ্তার হলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এ দিকে, খবর পেয়ে আজ শনিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম নির্যাতনের শিকার দুই কিশোর সুমন ও করিমুলের বাড়িতে যান এবং ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি দুই কিশোরের চিকিৎসা বাবদ প্রত্যেককে পাঁচ হাজার করে নগদ অর্থ দেন এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
Comments