ফেসবুকে ‘অবমাননাকর’ পোস্ট

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এর এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্টার ফাইল ফটো

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এর এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার দুপুরে সিলেটের জালালাবাদ থানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে এ মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অকিল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ও ২৯নং ধারায় এ মামলা করা হয়েছে এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।

গত শনিবার মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহির চৌধুরী।

শাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার ও মামলার বাদী মোহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বলেন, ‘একজন জাতীয় নেতা এবং মৃত একজন মানুষের বিরুদ্ধে সে অবমাননাকর স্ট্যাটাস দিয়েছে, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনানুগ মামলা দিয়েছে’।

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরীয় রুলের না হলেও বিষয়টি “স্টেট অব ল” ভায়োলেট করেছে। কর্তৃপক্ষ স্বপ্রণোদিত হয়ে না, বরং উপাচার্যের কাছে অনেক অভিযোগ এবং দাবির প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে’।

এ ব্যাপারে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা নেতা এবং ব্যক্তিত্ব। এই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তার সাথে (মোহাম্মদ নাসিমের) কোন সম্পর্ক নেই, সে এই ধরনের মানহানিকর ও আপত্তিকর পোস্ট করেছে। এটার তো দরকার ছিল না। সে সীমা লঙ্ঘন করেছে’।

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন যে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন লেকচারার কী রকম জঘন্য স্ট্যাটাস দিয়েছেন এবং তাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাতীয় নেতৃবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রী বা যারা শ্রদ্ধাভাজন—তাদের যদি কেউ মানহানি করে তো এর জন্য দেশের প্রচলিত আইনই যথেষ্ট’।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা এগুলোকে এনকারেজ করতে পারি না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। উনার (নাসিমের) অসম্মান অনেককে কষ্ট দিয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা-এজেন্সি থেকেও বলেছে যে এই জিনিসটা নজরে নেন। এখন আইন যে ব্যবস্থা নেয়ার নেবে’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আচরণ নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা রয়েছে কিন্তু শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বিষয় প্রক্টরীয় অন্য নীতিমালার আওতাধীন না হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কেনো মামলা করেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘সে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তাই বিষয়টা আমাদের উপর এসে পড়েছে’।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী হয়ে সে যে কাজটা করেছে আমরা কিন্তু এটার জন্য দায় নেব না। তার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অনেক নষ্ট হয়েছে। ভিতরে বাইরে অনেকে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই মামলা করা হয়েছে। এখন আইন নিজস্ব গতিতে চলবে’।

উপাচার্য আরো বলেন, ‘ছাত্ররা অবশ্যই সোচ্চার হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবে, মতামত দেবে। এতে কোন আপত্তি নেই এবং আমি তিন বছর উপাচার্য থাকা অবস্থায় এসবের জন্য কখনো কোন মামলা করিনি। এখন প্রচলিত আইনে সে যদি বেআইনি কিছু করে থাকে তো ব্যবস্থা হবে। সে যদি ইনোসেন্ট হয় তো কিছু হবে না। মামলা হলেই তো ভয়ের কোন ব্যাপার নেই’।

Comments

The Daily Star  | English

Don’t stop till the dream comes true

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday urged key organisers of the student-led mass uprising to continue their efforts to make students’ and the people’s dream of a new Bangladesh come true.

2h ago