শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা

‘মাহিরের বিরুদ্ধে মামলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চেতনাবিরোধী’

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
শাবিপ্রবি
স্টার ফাইল ফটো

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

গণমাধ্যমে প্রেরিত দুটি পৃথক বিবৃতিতে এ দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ১১২০ ও প্রাক্তন ২৮৬ শিক্ষার্থী।

গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহির চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাবিপ্রবি প্রশাসনের পক্ষে সিলেটের জালালাবাদ থানায় মামলাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ জুন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর সেদিন ফেসবুকে তার মৃত্যু নিয়ে অবমাননাকর পোস্ট দেন শিক্ষার্থী মাহির চৌধুরী।

শিক্ষার্থীদের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মাহির চৌধুরীর দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তাকে হুমকি ও হেনস্থা করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে রক্ষা না করে বরং তার বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছে যা প্রমাণ করছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্ক নিপীড়ণ ও দমনমূলক এবং তাদের অধীনে শিক্ষার্থী নিরাপদ নয়।

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা এই হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করে সব শিক্ষার্থীদের কাছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া দাবি জানান। একই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘নিপীড়নমূলক আইন’ হিসেবে অভিহিত করে তা বাতিলেরও দাবি জানান।

প্রাক্তন ২৮৬ শিক্ষার্থীর দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রশাসন কর্তৃক কোনোভাবে আইনি আশ্রয় নেওয়া যেমন চরম নিন্দনীয় কাজ, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সঙ্গেই সাংঘর্ষিক।

এতে আরও বলা হয়, মাহির চৌধুরী ফেসবুক লাইভে এসে তার পূর্বোক্ত মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে এই অমানবিক ও বিতর্কিত আইনের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, মাহিরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও মামলা দায়ের স্বাধীন ও মুক্ত ক্যাম্পাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চেতনাবিরোধী। শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কারোরই কোনো ‘অসৌজন্যমূলক’ লেখার কারণে মামলা করার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষক বা শিক্ষার্থীদের নাগরিক অধিকার হরণ ও বাকস্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-সম্মান বৃদ্ধি পায় না বরং এভাবে জিঘাংসামূলক নিষ্ঠুর আচরণ করে কখনো জ্ঞানচর্চা অব্যাহত রাখা যায় না।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হওয়া এবং চলমান শিক্ষার্থীর চলাচল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তাদের দাবি, অবিলম্বে মাহির চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, ক্যাম্পাসের যে কোনো ভিন্নমতাবলম্বী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যাবতীয় হুমকি থেকে হেফাজত নিশ্চিত করতে হবে এবং অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাবস্থায় অভিভাবকসুলভ, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে; এবং ক্যাম্পাসে সর্বাত্মক গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন:

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

2h ago