আইসিইউর জন্য হাহাকার, হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটেও বাঁচানো গেল না শিশুসন্তানকে
সন্তানকে বাঁচাতে হাসপাতালে একটি আইসিইউ দরকার ছিল। কিন্তু মেলেনি। এক হাসপাতাল থেকে ছুটেছেন আরেকটিতে, কিন্তু বাঁচাতে পারেননি দুই মাসের আদরের সন্তানকে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন শিশু ওয়ারিসা আহমেদের বাবা আব্দুল গফুর। পেশায় একজন স্কুলশিক্ষক।
নিউমুনিয়ার লক্ষণ নিয়ে গত শনিবার যখন মেয়েকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয়, কর্তব্যরত ডাক্তার ভর্তি না নিয়ে কালক্ষেপণ করেন, অভিযোগ করেন গফুর। ‘প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর ভর্তি করালেও আইসিইউ নেই বলে জানান হাসপাতালের ডাক্তার- নার্সরা।’
সন্তানকে বাঁচাতে অসহায়ের মতো ছোটাছুটি করতে থাকেন এই বাবা।
‘পরে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ১৫ মিনিট পরে ডাক্তার বলল আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে আমাদের আদরের ওয়ারিসা।’
প্রথম আলোর আলোকচিত্রী জুয়েল শীল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন বাবা তার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য ছুটছেন- এই দৃশ্য ধারণ করেন।
জুয়েল বলেন, ‘ওই মুহূর্তটি খুব মর্মান্তিক ছিল। নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়েছিল যখন এক পর্যায়ে ওই বাবা আমাকে আইসিউর জন্য অনুরোধ করেন।‘
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ শামীম হাসান বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সত্যি অসহায় হয়ে পড়ছি।’
তিনি বলেন, শনিবার যখন শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল সেসময় আমাদের হাসপাতালে কোনও আইসিইউ খালি ছিল না।এটা খুব কষ্টের যে করোনা পরিস্থিতির কারণে চট্টগ্রামের অনেকেই স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং দিন-দিন তা খারাপের দিকে যাচ্ছে।’
শিশুটির ভর্তি কিংবা চিকিৎসায় কর্তব্যরত ডাক্তার- নার্সদের দিক থেকে কোনও গাফিলতি ছিল কিনা তা আমরা তদন্ত করব,’ বলেন ডা. শামীম।
Comments