সড়কে কালভার্ট ভাঙ্গাগড়ায় সরকারি টাকার অপচয়
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর-মোস্তফি সড়কের সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকার ৬টি কালভার্ট ভেঙ্গে আবারও নির্মাণ করা হচ্ছে। ভারী যানবাহন চলার উপযোগী করে নকশায় পরিবর্তন এনে কালভার্টগুলো পুনর্নিমাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
মাত্র তিন বছরের মধ্যে কালভার্ট ভেঙ্গে পুনরায় নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সরকারি অর্থ অপচয়ের।
মহেন্দ্রনগর-মোস্তফি সড়কটি বড়বাড়ী- বুড়িমারী ও রংপুর- কুড়িগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ সড়ক। এটি লালমনিরহাট শহরের সাথে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ পথ।
গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর অধীনে ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খরচে সড়কটি সংস্কার ও কালভার্টগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। অল্পদিনের মধ্যে সড়কটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এলজিইডি গ্রামীণ অবকাঠামো নকশায় সড়ক ও কালভার্ট নির্মাণ করে থাকে কিন্তু মহেন্দ্রনগর- মোস্তফি সংযোগ সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় অল্প সময়ে সড়কের অবস্থা খারাপ হয় বলে জানায় এলজইডি।
২০১৭ সালের নভেম্বরে সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগে (আরএইচডি) হস্তান্তর করে এলজিইডি।
তবে সড়ক ও কালভার্ট নির্মাণে এলজিইডি অনিয়ম ও দুর্নীতি করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। মহেন্দ্রনগর এলাকার ব্যবসায়ী নুর ইসলাম খান বলেন, সরকার বড় অঙ্কের বাজেট দিলেও এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশে নিম্নমানের কাজ করেছিল তাই অল্পদিনের মধ্যেই রাস্তাটি বেহাল দশায় পড়ে যায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সেকশন অফিসার (এসও) উপসহকারী প্রকৌশলী ফয়সাল আমেদ বলেন, এলজিইডির অধীনে নির্মিত কালভার্টগুলো ভেঙ্গে নতুন করে নতুন নকশায় নির্মাণ করা হচ্ছে। ২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রশস্তে ৬ মিটার, ৩ মিটার, ৩ মিটার, ৪ মিটার, ৪ মিটার ও ৪ মিটার দৈর্ঘ্যে ৬টি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। নিয়মিত মাঠে থেকে কাজের মান দেখভাল করছেন বলে জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খান বলেন, তিনি এখানে নতুন এসেছেন, তাই ওই কাজের ব্যাপারে তার কোন ধারণা নেই। সড়কটি এখন সড়ক ও জনপথের অধীন তাই তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সেসময়ের এ কাজের ঠিকাদার বাবুল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এলজিইডির নকশা অনুযায়ী এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। গ্রামীণ অবকাঠামো অনুযায়ী এটি হয়েছিল। তবে এ সড়ক দিয়ে ভারী যান চলাচল করায় সড়কটি সেই চাপ নিতে পারেনি।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহবুব আলম বলেন, ‘আরএইচডির নকশা অনুযায়ী ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তাই কালভার্টগুলো ভেঙ্গে আরএইচডির নকশা অনুযায়ী করা হচ্ছে। যেহেতু বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পাথরবোঝাই ভারী যানবাহন সড়কটি ব্যবহার করে তাই কালভার্টগুলো প্রশস্ত ও মজবুত করতে হচ্ছে।’
Comments