বেনজেমা-আসেনসিওর লক্ষ্যভেদে ভ্যালেন্সিয়াকে উড়িয়ে দিল রিয়াল
গোলমুখে খরা কাটিয়ে দুর্দান্ত নৈপুণ্য উপহার দিয়ে করিম বেনজেমা পেলেন জোড়া গোল। চোট থেকে প্রায় এক বছর পর মাঠে ফেরা মার্কো আসেনসিও জালের ঠিকানা খুঁজে নিলেন প্রথম ছোঁয়াতে। ভ্যালেন্সিয়াকে উড়িয়ে লা লিগার শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে আনল রিয়াল মাদ্রিদ।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের মাঠ আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে ৩-০ গোলে জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। প্রথম গোল পেতে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয় ৬১তম মিনিট পর্যন্ত। পরের ২৫ মিনিটের মধ্যে আরও দুবার বল জালে জড়িয়ে দারুণ জয় তুলে নেয় তারা।
দুই পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামা রিয়াল ম্যাচের শুরুতে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায়। চতুর্থ মিনিটে কাসেমিরোর দূরপাল্লার শট সহজেই লুফে নেন ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক জ্যাসপার সিলেসেন। সাত মিনিট পর ডি-বক্সের ভেতর থেকে টনি ক্রুসের শটও অনায়াসে গ্লাভসবন্দি করেন তিনি।
পরের মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। তবে আবারও ভ্যালেন্সিয়ার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন নেদারল্যান্ডস তারকা সিলেসেন। বেনজেমার বাড়ানো বলে বেলিজিয়াম ফরোয়ার্ড এডেন হ্যাজার্ডের নিচু শট পা দিয়ে ফিরিয়ে দেন তিনি।
এরপর ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিতে শুরু করে অতিথিরা। চতুর্দশ মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে এগিয়েও যেতে পারত তারা। পাল্টা-আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে বাম পায়ে কোনাকুনি শট নেন রদ্রিগো মোরেনো। কিন্তু রিয়ালকে বাঁচিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। ঝাঁপিয়ে পড়া বেলজিয়ান গোলরক্ষকের হাতে লেগে বল বাধা পায় পোস্টে।
২১তম মিনিটে লক্ষ্যভেদও করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। তবে তাকে বল বাড়িয়ে দেওয়া ম্যাক্সি গোমেজ ছিলেন অফসাইডে। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলটি বাতিল করেন রেফারি।
সাত মিনিট পর দানি কারভাহালের প্রচেষ্টা রুখে দেন সিলেসেন। ৪৪তম মিনিটে জিওফ্রে কনদগবিয়ার দূরপাল্লার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন কোর্তোয়া। দুই গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় সমতায় থেকে বিরতিতে যায় দুদল।
বিরতির পর ভ্যালেন্সিয়াকে চেপে ধরে রিয়াল। ধারাবাহিক আক্রমণের ফল তারা পায় ৬১তম মিনিটে। লুকা মদ্রিচের সঙ্গে পাস দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সে বেনজেমার উদ্দেশ্যে বল বাড়ান হ্যাজার্ড। নিচু শটে জাল কাঁপান সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আগের আট ম্যাচে মাত্র এক গোল করা এই স্ট্রাইকার।
৭৪তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন আসেনসিও। গেল বছরের জুলাইতে পায়ে বড় ধরনের চোট পেয়েছিলেন তিনি। চলতি মৌসুমে তার ফেরার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে মাঝে লম্বা সময় খেলা না হওয়াটা শাপেবর হয়েছে এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের জন্য।
প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে মাঠে ঢোকার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ভ্যালেন্সিয়ার জালে বল পাঠান আসেনসিও। ডি-বক্সের বাম প্রান্ত থেকে ফারলান্দ মেন্দির ক্রসে কোনাকুনি ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
৮৬তম মিনিটে বেনজেমার দ্বিতীয় গোলেও অবদান রাখেন আসেনসিও। তার কাছ থেকে বল পেয়ে বাম পায়ের অসাধারণ জোরালো ভলিতে স্কোরলাইন ৩-০ করেন ফরাসি তারকা। চলতি লিগে এটি তার ১৬তম গোল। সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন তিনি। ২১ গোল নিয়ে শীর্ষে লিওনেল মেসি।
তিন মিনিট পর দশ জনের দলে পরিণত হয় ভ্যালেন্সিয়া। সার্জিও রামোসের পায়ে টানা কয়েকবার আঘাত করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফরোয়ার্ড কাং-ইন লি।
এই জয়ে ২৯ রাউন্ড শেষে স্প্যানিশ লা লিগার পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৬২। সমান ম্যাচ খেলে দুই পয়েন্ট বেশি নিয়ে এক নম্বর অবস্থানে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সা।
Comments