লক্ষ্মীপুরে মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাতৃত্বকালীন ভাতা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাহেবেরহাট ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গোফরানের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে এই কার্ড করে দেওয়ার জন্য টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন পাঁচ নারী।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাতৃত্বকালীন ভাতা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাহেবেরহাট ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গোফরানের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে এই কার্ড করে দেওয়ার জন্য টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন পাঁচ নারী।

গত রোববার এ বিষয়ে তারা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর কাছে।  

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে  গোফরান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার সময় নাছিমা (অভিযোগকারীদের একজন) তাকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কার্ড হয়ে যাওয়ার পর সে আর টাকা দেয়নি। যে কারণে বিকাশ অ্যাকাউন্টের তালিকা তৈরির সময় নাছিমার মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে তিনি নিজের মোবাইল নম্বরটি দিয়ে দেন।

ওই টাকা তিনি ফেরত দিবেন বলে জানিয়েছেন। তবে, বাকি চার নারীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

ইউএনওর কাছে করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোফরান ২০১৮ সালে অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতা তালিকায় চরজগবন্ধু এলাকার মো. রিপনের স্ত্রী নাছিমা আক্তারের নাম অন্তর্ভুক্ত করান। নাম তালিকাভুক্তির পর ব্যাংক থেকে ছয় মাসের ভাতার টাকা উঠিয়েছেন নাছিমা। কিন্তু এর পর থেকে আর কোনও টাকা তার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরে আসেনি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে খবর নিয়ে জানতে পারেন, যে মোবাইল নম্বরে টাকা গিয়েছে সে মোবাইল অ্যাকাউন্টের তালিকায় দেওয়া বিকাশ নম্বরটি তার নয়। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা গোফরানের বিকাশ নম্বর দেওয়া এবং ওই নম্বরেই তিনি বিভিন্ন সময়ে ভাতার ১৪ হাজার ৪০০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। পরে তিনি ওই টাকার জন্য গোফরানসহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে বারবার ধরনা দিলেও কোনও কাজ হয়নি। বরং তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন নাছিমা।

অভিযোগকারী অপর চার নারী একই এলাকার রাবেয়া বেগম, রেখা আক্তার, নাসিমা বেগম, স্ত্রী রুনা আক্তার জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি’র কার্ড ও গৃহহীনদের জন্য দেওয়া ঘরসহ সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গোফরান তাদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা করে নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পার হলেও সেই সুবিধা না পেয়ে গোফরানের কাছে তারা টাকা ফেরত চান। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই টাকা ফেরত পাননি, বরং তাদের বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

কমল নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. নুরুল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এ ধরনের খবর তিনি জানেন না। গোফরান যদি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এ ধরনের অপকর্ম করে থাকে তবে বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেবেন। প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রোববার তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার কথা রয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago