স্বাস্থ্য বিভাগই স্বাস্থ্যবিধি মানলো না
লালমনিরহাটে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে জনসমাগম ঘটিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি অভিযোগের তদন্ত করেছে লালমনিরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ।
আজ রোববার দুপুরে জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ফলিমারী গ্রামে ফলিমারী কমিউনিটি ক্লিনিকে তদন্তে যায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
এসময় অভিযোগকারীসহ প্রায় দেড় হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, রোগীদের ঠিকমতো ওষুধ না দেওয়া ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) সুবর্ণা রায়ের বিরুদ্ধে গত ৩১ মে লিখিত অভিযোগ করেন ক্যাচমেন্ট এলাকার বাইরের আশরাফুল ইসলাম। এতে সই করেন আরও ৮৩ জন।
অভিযোগের তদন্তকাজে গত ১৬ জুন আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে তাদের ডাকা হয়। সেদিন গ্রামবাসীরা গেলেও, তদন্ত হয়নি। আজ লোকসমাগম ঘটিয়ে তদন্ত করে স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়ের নির্দেশে লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দীপঙ্কর রায় ও আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর আরেফিন কল্লোল যৌথভাবে এ তদন্ত করেন।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর আরেফিন কল্লোল বলেন, অভিযোগটি অফিসিয়ালভাবে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল এবং ১৬ জুন সবাইকে ডাকাও হয়েছিল। গ্রামের লোকজন গেলেও প্রধান অভিযোগকারী না আসায় অফিসিয়াল তদন্ত হয়নি।
জনসমাগমের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা ক্লিনিকের ভেতর অভিযোগের তদন্ত করছেন আর বাইরে কী হচ্ছে সেটা তাদের বোধগম্য নয়।’
অপর তদন্তকারী লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দীপঙ্কর রায় জানান, তারা তদন্ত করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষকে জমা দেবেন আর সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে ক্লিনিকের সিএইচসিপি সুবর্ণা রায় বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের ব্যাপারে তাকে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি।
‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীকে আমি চিনি না। তিনি কখনো এই ক্লিনিকে সেবা নিতে আসেননি। কারণ তিনি এই ক্লিনিকের ক্যাচমেন্ট এলাকার বাসিন্দা নন,’ তিনি জানান।
‘আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি লিখিতভাবে জবাব দিয়েছি,’ তিনি বলেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বিশেশ্বর রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে তাকেও কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। সিএইচসিপি সুবর্ণার বিরুদ্ধে তাদের কোনও অভিযোগ নেই, কারণ তিনি যথাসময়ে ক্লিনিকে আসেন ও লোকজনকে সেবা দেন বলে তিনি জানান।
অভিযোগকারী আশরাফুল ইসলাম জানান, তিনি ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের অধিবাসী তাই জনস্বার্থে তিনি এ অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে স্থানীয়রাও সই করেছেন।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর স্বাস্থ্য বিভাগ দায়িত্ব নিয়ে সরেজমিন তদন্ত করেছে। তদন্তের ফলাফল ঠিক করবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন। তদন্তের সময় জনসমাগম ঘটলে তদন্ত বাতিলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তদন্ত কমিটিকে।
Comments