‘হামরা এ্যালা ইলিপ চাই না, হামরা একটা বাঁধ চাই’

তিস্তা ও ধরলা নদীর অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ছবি: এস দিলীপ রায়

‘হামরা এ্যালা ইলিপ চাই না, হামরা একটা বাঁধ চাই। এখানে একটি বাঁধ নির্মাণ করলে হামার কষ্ট দূর হবে। তাহলে হামাক আর বানোত ভাসা নাগবার নয়, আর নদী ভাঙনও হামাক কিছু করবার পাবার নয়।’ আজ সোমবার দ্য ডেইলি স্টারের কাছে এভাবেই নিজের কষ্টের কথাগুলো বলেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার নদীপাড়ের বাসিন্দা সবুর আলী (৫৬)।

তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কমতে শুরু করায় লালমনিরহাটের অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এতে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি, ফলের বাগানসহ নানা স্থাপনা। ফলে, ভাঙনের কবলে বসতভিটা হারিয়ে অনেকে ভূমিহীন হয়ে পড়ছেন। তারা আশ্রয় নিচ্ছেন সরকারি রাস্তা, খাস জমি ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। কোনো কোনো এলাকায় নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বাড়িঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষজন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুরুল এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র রায় (৬৫) বলেন, ‘নদীর পানি কমতে শুরু করায় রোববার রাত থেকে ধরলা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমার বসতভিটাও নদী গর্ভে চলে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’

সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা গ্রামের শাহীন মণ্ডল (৪৪) জানান, ‘তিস্তা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা ও আবাদি জমি। গ্রামের অনেক মানুষ ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। আগামী কয়েকদিনে ভাঙন অব্যাহত থাকলে গ্রামের শতাধিক বসতভিটা ও কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি তিস্তার গর্ভে চলে যাবে।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরল আমিন বলেন, ‘বানের পানি কমায় তিস্তা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে এই ইউনিয়নের অনেক গ্রামে। কোনো কোনো গ্রামে স্থানীয় লোকজন নিজ উদ্যোগে ভাঙন ঠেকাতে বাঁশের পাইলিং করছেন। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মুহিবুল ইসলাম বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন তিস্তা ও ধরলা নদীর ভাঙন কবলিত কিছু এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট তৈরি করছে। অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা নিবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago