‘ভ্যাম্পায়ারের দেশ’ রোমানিয়ার গল্প
আজকে এমন একটি দেশ সম্পর্কে আলোচনা করবো যে দেশটি অনেকের কাছে ‘কান্ট্রি অব ড্রাকুলা’ কিংবা ‘ভ্যাম্পায়ারের দেশ’ নামেও পরিচিত। এটি এমন একটি দেশ যেখানে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আইন করে কালো জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিককে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
রোমানিয়ার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও এখানকার মানুষের উদ্যমতায় ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লস এতোটাই মুগ্ধ হয়েছেন যে তিনি মাঝে-মধ্যেই এ দেশে বেড়াতে আসেন।
এই দারুণ ও অদ্ভুত দেশ রোমানিয়া ইউরোপের অনেকের কাছে রোমানিয়া জিপসি অর্থাৎ যাযাবরের দেশ নামেও পরিচিত। তবে এ ধারণাটি সম্পূর্ণভাবে ভুল।
ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তর ভ্রাম্যমাণ জনগোষ্ঠী যাদের নৃতাত্ত্বিকভাবে ‘রোমা’ নামে অভিহিত করা হয় অনেকে তাদের সঙ্গে রোমানিয়ানদেরকে এক করে ফেলেন দুটি নামই কাছাকাছি হওয়ার কারণে।
রোমানিয়া নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই। কারণ, আমি যে কয়েকটি দেশে ভ্রমণ করেছি আমার চোখে রোমানিয়াই সেরা। এখানকার সাধারণ মানুষের আতিথেয়তা, বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা যে কারো মন ভোলাতে সক্ষম।
ইউরোপ মহাদেশের সাংস্কৃতিক কাঠামোর বিবেচনায় অনেকে রোমানিয়াকে সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবেও স্বীকৃতি দিয়ে থাকেন।
‘রোমানিয়া’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ‘রোমানাস’ থেকে। এর অর্থ ‘সিটিজেনস অব রোম’ বা রোমের অধিবাসী।
১৮৭৭ সালে রোমানিয়া তুরস্কের অটোমান শাসকদের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার পর ১৮৮১ সালে ‘কিংডম অব রোমানিয়া’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৭ সালের জরিপ অনুযায়ী রোমানিয়ার জনসংখ্যা দুই কোটির কাছাকাছি। জনসংখ্যার শতকরা একানব্বই ভাগ খ্রিস্টান (মূলতঃ অর্থোডক্স খ্রিস্টান) ধর্মে বিশ্বাসী।
রোমানিয়ার বেশির ভাগ মানুষই রোমানিয়ান নামক নৃগোষ্ঠীর সদস্য। তবে, দেশটিতে হাঙ্গেরিয়ান, জার্মান, রোমা, ইউক্রেনিয়ান জাতিগোষ্ঠীর মানুষও রয়েছেন। দেশটির শহরাঞ্চলে বসবাস করা মানুষেরা সাধারণত পাশ্চাত্য ভাবধারার পোশাক পরে থাকেন। তবে গ্রামাঞ্চলের দিকে বসবাস করা মানুষেরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরতে বেশি ভালোবাসেন।
রোমানিয়ায় মেয়েদের চুল দেখে বলে দেওয়া যায় তিনি বিবাহিত কী না। অবিবাহিত মেয়েরা চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন। সাধারণত চুল বেণী করে থাকেন। বিবাহিত নারীরা মারামা নামক এক ধরণের কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রাখেন।
রোমানিয়ার জাতীয় পতাকার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে সেখানে নীল, হলুদ এবং লাল— এ তিনটি রঙের সংমিশ্রণ রয়েছে যা ট্রান্সসিলভানিয়া, মলদাভিয়া এবং ওয়ালাসিয়া— এ তিনটি ভিন্ন স্থানকে প্রতিনিধিত্ব করে। এ তিনটি স্থান দেশটির ঐতিহাসিক একতার পরিচয় বহন করে।
রোমানিয়ার রাজধানী এবং বৃহত্তম নগরের নাম বুখারেস্ট যা দেশটির শিল্প, সাহিত্য এবং বাণিজ্যসহ যাবতীয় প্রসাশনিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার বিবেচনায় বুখারেস্ট ষষ্ঠ বৃহত্তম শহর। রোমানিয়ার জাতীয় সংসদ যা রোমানিয়ার স্থানীয় ভাষায় ‘পার্লামেন্টুল রোমানিয়েই’ বুখারেস্টে অবস্থিত।
এখানকার ভবনগুলোর নির্মাণশৈলী, শহরের গঠন, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও এর সঙ্গে বিদ্যমান সাহিত্য-চিত্রকলার অপরূপ মেলবন্ধনের কারণে বুখারেস্টকে পূর্ব ইউরোপের প্যারিস নামেও ডাকা হয়।
প্রায় ৯২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোমানিয়া দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের সবচেয়ে বড় দেশ। আয়তনে এটি ইউরোপ মহাদেশের দ্বাদশ বৃহত্তম রাষ্ট্র। দেশটির দক্ষিণে বুলগেরিয়া, পশ্চিমে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি এবং পূর্বে ইউক্রেন ও মলদোভা প্রজাতন্ত্র অবস্থিত। এছাড়াও, দেশটির দক্ষিণ পূর্বের প্রায় ২৪৫ কিলোমিটার বরাবর কৃষ্ণসাগর বা ব্ল্যাক সির উপকূল রয়েছে।
ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী দানিয়ুব অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, মলদোভা ও ইউক্রেন— এই নয়টি দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রোমানিয়াতে এসে কৃষ্ণসাগরের কাছে দানিয়ুব বদ্বীপ তৈরি করেছে। এ বদ্বীপটি পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল জলাভূমির মধ্যে একটি। এখানকার আপুসেনি পর্বতমালার নিম্নাংশে অবস্থিত স্কারিশোয়ারা হিমবাহটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভূ-গর্ভস্থ হিমবাহ যা আনুমানিক সাড়ে ৩ হাজার বছর পুরনো বলে মনে করা হয়।
কার্পাথিয়ান পর্বতমালার পূর্ব ও দক্ষিণাংশ রোমানিয়ার মধ্যভাগে অবস্থিত। ইউরোপের সবচেয়ে বেশি অঞ্চল জুড়ে বিরাজমান অনিয়মিত বন-জঙ্গলগুলো একমাত্র এ রোমানিয়াতে রয়েছে। এ সব বন-জঙ্গল বিভিন্ন জীব-বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ।
ব্রাউন বিয়ার বা বাদামি ভাল্লুকের জন্য রোমানিয়া বিখ্যাত। রাশিয়ার অংশটুকু বাদ দিলে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি বাদামি ভাল্লুক রোমানিয়াতেই পাওয়া যায়।
দেশের বিভিন্নস্থানে অবস্থিত পর্যটন কেন্দ্রগুলো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ কারণে পর্যটন শিল্প বর্তমানে রোমানিয়ার অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আঙুর, আপেল, সরিষা ও বিভিন্নজাতের সবজি থেকে প্রস্তুতকৃত তেল ও বিভিন্ন ধরণের ফার্মাসিউটিক্যাল, কেমিক্যাল, লোহা ও ইস্পাত শিল্প, মেশিনারি শিল্প, বস্ত্রশিল্প এবং মোটর গাড়ি তৈরির কারখানা রোমানিয়ার অর্থনীতিকে অত্যন্ত বেগবান করেছে।
প্রকৃতি থেকে পাওয়া প্রচুর পরিমাণে খনিজ তেল ও পৃথিবীতে জমা থাকা স্বর্ণের এক বিশাল ভাণ্ডার রোমানিয়াতে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোমানিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ওয়াইন প্রস্তুতকারক দেশগুলোর একটি। বিখ্যাত মোটরগাড়ি প্রস্তুত কোম্পানি ‘ডাসিয়া’র সদরদপ্তর রোমানিয়ার মিওভেনিতে।
রোমানিয়ার জাতীয় মুদ্রার নাম রোমানিয়ান লিউ। লিউ শব্দের অর্থ হচ্ছে সিংহ। এক রোমানিয়ান লিউ সমান ২১ ইউরো সেন্ট যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় উনিশ টাকার সমতুল্য।
পূর্ব ইউরোপে প্রচলিত মুদ্রাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে রোমানিয়ান লিউকে সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রা হিসেবে ধরা হয়। পলিমারের তৈরি রোমানিয়ান লিউয়ের প্রতিটি নোটই এক একটি শিল্পকর্ম।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর তুলনায় কম স্বচ্ছল অর্থনীতির দেশ রোমানিয়া। এ কারণে এ দেশে জীবন-যাত্রার মানও তুলনামূলকভাবে নিম্ন। তবে রোমানিয়ার মানুষ খুবই পরিশ্রমী। এ কারণেই দেশটি খুব দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
রোমানিয়ার মানুষ তাদের বন্ধুসুলভ আচরণ এবং অতিথি আপ্যায়নের জন্য বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে খুবই সমাদৃত। বলা হয়ে থাকে যে বিদেশি পর্যটক যারা এ দেশে বেড়াতে আসেন তাদের কেউ যদি স্থানীয় ভাষায় কথা বলেন তাহলে সেখানকার মানুষেরা খুবই খুশি হন। রোমানিয়ার মানুষ অতিথিদের বিভিন্ন খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতে ভালোবাসেন।
রোমানিয়ার সরকারি ভাষা রোমানিয়ান। এটি ইতালীয় কিংবা ফরাসির সঙ্গে অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। পূর্ব ইউরোপের মধ্যে রোমানিয়ান একমাত্র ভাষা যা ল্যাটিন ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এর চারপাশে স্লাভিক/ইউরালিক ভাষার জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। দেশটির প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষ রোমানিয়ান ভাষায় কথা বলে থাকেন।
ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স কিংবা পর্তুগাল থেকে হাজারো মাইল দূরে অবস্থিত একটি দেশে কীভাবে ল্যাটিন ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে প্রবেশ করলো সেটা নিয়ে নেহাৎ গবেষণা কম হয়নি। তবে এখনও এর প্রকৃত কারণ কেউ বের করতেও পারেনি।
ধারণা করা হয়, পূর্ব রোম সাম্রাজ্য তথা বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের পতন ঘটলেও বাইজেনটাইন রাজার অধীনে কাজ করা সৈনিকদের এক অংশ সুউচ্চ কার্পেথিয়ান পর্বতমালার কারণে এ অঞ্চলটিকে তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তাদের মাধ্যমে আজকের দিনের রোমানিয়ানদের গোড়াপত্তন হয়েছে। অর্থাৎ, স্লাভিক ও ইউরালিক ভাষাগোষ্ঠীর মানুষদের দ্বারা বেষ্টিত হওয়া সত্ত্বেও রোমানিয়াতে ল্যাটিন ভাষার প্রচলন ঘটে।
আবার অনেকে মনে করেন, সম্রাট নিরোর হাতে রোমের পতন ঘটলে রোম থেকে একদল মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত সুউচ্চ কার্পেথিয়ান পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত এ অঞ্চলটিতে তারা বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। তাদের হাত ধরেই এ অঞ্চলটিতে ল্যাটিন ভাষার প্রচলন ঘটে।
রোমানিয়ার বাইরে মলদোভা প্রজাতন্ত্রের একটা বড় অংশের মানুষের ভাষা রোমানিয়ান। এছাড়াও হাঙ্গেরিয়ান, সার্বিয়ান, জার্মান, ইউক্রেনিয়ান— এ সব ভাষারও প্রচলন দেশটিতে রয়েছে।
যেহেতু রোমানিয়ানরা জাতিগতভাবে ল্যাটিন ও একই সঙ্গে ভৌগলিকভাবে চারদিক থেকে স্লাভিক ও ইউরেলিক জাতিগোষ্ঠীর মানুষের দ্বারা আবদ্ধ ও দীর্ঘদিনের অটোমান শাসনের প্রভাবের কারণে অনেকে রোমানিয়াকে ইউরোপের সবচেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ হিসেবে আখ্যা দেন।
রোমানিয়ায় প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের বসবাসের প্রমাণ রয়েছে। পেশতারা কু ওয়াসে নামের এক জায়গা রয়েছে যেখানে মানব সভ্যতার সবচেয়ে পুরাতন জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে এর বয়স ৩৭ হাজার ৮০০ বছর থেকে ৪২ হাজার বছর বলে জানা গিয়েছে।
রোমানিয়ার আজকের মানচিত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সের ভার্সাই শহরে স্বাক্ষরিত ‘Treaty of Trianon’ এর মধ্য দিয়ে।
রোমানিয়ার খাবারে তুরস্ক, গ্রিস, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, ইউক্রেন, ইতালির প্রভাব রয়েছে। ‘চরবা দে বুরতা’ রোমানিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। ওয়াইনের জন্য রোমানিয়া আলাদা এক ব্র্যান্ড বিশ্বব্যাপী।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রোমানিয়া সোভিয়েত মিলিটারির আক্রমণের শিকার হয়। দেশটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দেশটিতে কমিউনিজমভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ছিল। ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব নিকোলেই চশেস্কু রোমানিয়ার এক সময়কার একনায়ক ছিলেন।
ফুটবল রোমানিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। ইউরোপের জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব স্টুয়া বুখারেস্টির পীঠস্থান রোমানিয়ার বুখারেস্টে। এছাড়াও টেনিস দেশটির অন্যতম একটি জনপ্রিয় খেলা। ডব্লুটিএর রেটিং অনুযায়ী বর্তমানে শীর্ষে থাকা টেনিস তারকা সিমোনা হালেপ একজন রোমানিয়ান।
১৯৭৬ সালে কানাডার মন্ট্রিয়ালে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অলিম্পিক আসরে অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দশে দশ দেওয়া হয় রোমানিয়ার এক জিমন্যাস্ট খেলোয়াড় নাদিয়া এলেনা কোমানেসিকে। তিনি পাঁচটি স্বর্ণপদক লাভ করার গৌরব অর্জন করেছিলেন।
পৃথিবীর অন্যতম সেরা ড্রাইভিং রোড হিসেবে পরিচিত ট্রান্সফাগারাসান হাইওয়েটি রোমানিয়াতে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং নিদর্শনগুলোর একটি।
রাকিব হাসান, শিক্ষার্থী, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া
Comments