দালালের খপ্পরে পড়ে অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের
পিরোজপুর সদর উপজেলায় টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র তুষার শেখের (১৫) অপচিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে তুষারের চাচা হিরণ শেখ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ।
তুষারের বাড়ি পিরোজপুর পৌরসভার ঝাটকাঠি এলাকায়। তার বাবার নাম সোহাগ শেখ।
হিরণ শেখ বলেন, ‘গতকাল বিকালে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তুষারের ডান পা ভেঙে যায়। জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে আমরা খুলনার উদ্দেশে রওনা হই।’
‘কিছু দূরে যাওয়ার পরে রাস্তার পাশে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে ফেলেন চালক কবির। সেখানে সদর হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট শচীন রায়, কর্মচারী মাজেদুল ও মনিরসহ আরও কয়েকজন বলেন, খুলনায় না নিয়ে এখানেই তুষারের চিকিৎসা সম্ভব। তারা পিরোজপুরে চিকিৎসা করাতে জোর করেন। চিকিৎসা খরচ বাবদ তাদের সঙ্গে ৩০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। তুষারকে নেওয়া হয় পিরোজপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মৃত আব্দুস সালাম মধুর বাড়িতে। তাকে অনেকগুলো ইনজেকশন দেওয়া হয়। চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় আপত্তি জানালে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন’— বলেন হিরণ শেখ।
তিনি আরও বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে আমাদের জানানো হয়, তুষারের অক্সিজেন প্রয়োজন। দ্রুত গাড়ির ব্যবস্থা করে আবার পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তুষারকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ প্রসঙ্গে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. নিজাম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রথমে তুষারকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। রাত ১২টার দিকে যখন আবার তুষারকে আনা হয়, ততক্ষণে সে মারা গেছে। অপচিকিৎসা হয়েছে হাসপাতালের বাইরে। এতে হাসপাতালের কোনো কর্মচারী জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলর মধুর দুই ছেলে আলী হাসান লিয়ন ও আলী ইমাম অন্তুকে রাতেই আটক করা হয়েছে। বাকিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
Comments