ফেসবুকে ছবি, ৯ বছর পর নিখোঁজ স্বজনকে খুঁজে পেল পরিবার

একসময় ঢাকা শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন সোহেল রানা। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানসহ রাজধানীতেই বসবাস ছিল নাটোরের এই যুবকের। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর থেকে নানা জায়গায় খোঁজ করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরাও তাকে মৃতই ধরে নিয়েছিলেন।
ফেসবুকে এই ছবির সূত্র ধরেই ৯ বছর পর স্বজনরা ফিরে পায় নিখোঁজ সোহেল রানাকে। ছবি: সংগৃহীত

একসময় ঢাকা শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন সোহেল রানা। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানসহ রাজধানীতেই বসবাস ছিল নাটোরের এই যুবকের। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর থেকে নানা জায়গায় খোঁজ করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরাও তাকে মৃতই ধরে নিয়েছিলেন।

৯ বছর পর নিখোঁজ সোহেল রানার সন্ধান মিলেছে একটি ছবির সূত্র ধরে। আস্তাকুড় থেকে এক ব্যক্তির আম তুলে খাওয়ার ছবি ফেসবুকে দিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার

তরুণ ব্যবসায়ী, জাগো ফাউন্ডেশনের অঙ্গ-সংগঠন ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ’র স্বেচ্ছাসেবক তারেক আজিজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তারেকের ছবি আপলোড হওয়ার পর সন্ধান মেলে সোহেল রানার।

তারেক আজিজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ১৩ জুন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কোর্ট রোডে পৌর সুপার মার্কেটের খোলা জায়গায় ফেলে রাখা পঁচা আম এক ব্যক্তিকে কুড়িয়ে খাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। এরপর ওই ব্যক্তির কাছে গিয়ে তাকে এক কেজি আম কিনে দিই। কিন্তু সেসময় তাকে পেট পুরে খাবার না খাওয়ানোয় অস্বস্তি বোধ করছিলাম। এরপর থেকে প্রতিদিনই ওই ব্যক্তিকে খুঁজতে থাকি।’

তিনি বলেন, ‘পাঁচ দিন পর ১৮ জুন রাতে তাকে খুঁজে পেয়ে ভাত খাওয়াতে নিয়ে যাই। খাওয়ার সময় তার সঙ্গে কথা বলে তার বাড়ি নাটোর বলে জানতে পারি।’

এরপর তারেক ফেসবুকে ওই ব্যক্তির একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এবং তাকে নিয়ে লিখেন। নাটোরে কর্মরত সংশ্লিষ্টদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে স্থানীয়ভাবে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করেন। সেখানকার অনেকের কাছে ভিডিও পাঠান। পরে নাটোরের স্থানীয় এক যুবক ওই ব্যক্তিকে চিনতে পেরে তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপরই জানা যায়, সোহেল নামের ওই ব্যক্তি গত নয় বছর ধরে নিখোঁজ। পরিবারের সদস্যরা ভিডিও কলের মাধ্যমে তাকে দেখে পরিচয় নিশ্চিত করেন।

তারেক বলেন, ‘গত ২১ জুন রাতে সোহেলের পরিবারের লোকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।’

পরিবারের সদস্যরা তারেককে জানায়, সোহেল নাটোরের সিংড়া উপজেলার শতকুঁড়ি গ্রামের মজিদ শাহ’র বড় ছেলে। তার বৃদ্ধ বাবা-মা এখনো বেঁচে আছেন। তার আরেক ভাই ও দুই বোন রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী এবং তৌফিক হাসান নামের এক ছেলে ও সানিয়া আক্তার নামে কন্যা সন্তান রয়েছে।

সোহেলের বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দেওয়া পরিবারের সদস্যরা তাকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

তার ছোট ভাই উজ্জ্বল বলেন, 'আমার ভাইকে জীবিত ফিরে পাবো সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। তাকে ফিরে পেয়ে আমাদের পরিবারে এখন ঈদের আনন্দ বইছে। তবে সোহেল রানা এখন খুব বেশি কথা বলছেন না। তার মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল নয় বলে মনে করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

9h ago