ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে কিস্তি আদায় স্থগিত রেখেছে ব্র্যাক

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রেখেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।
কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষকে সহায়তা করতে সংস্থাটি কৃষক, বিভিন্ন খামার মালিক, মাছ চাষি ও ফার্মেসিসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে সীমিত পরিসরে ঋণ বিতরণ এবং বিকাশের মাধ্যমে সদস্যদের সঞ্চয় ফেরত দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। এ ছাড়া, তারা করোনাভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার প্রচারণা ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এসব কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মঈনুল হক চৌধুরী। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে সব ধরনের কিস্তি ও সঞ্চয় আদায় গত ২৪ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।’
সংস্থাটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর শাখা ব্যবস্থাপক (দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গত মে মাস থেকে ২১ জুন পর্যন্ত আমাদের এলাকাধীন ১৫৯ জন গ্রাহককে ১২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ব্র্যাক।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার এলাকা ব্যবস্থাপক (দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ব্র্যাকের কর্মীরা মাঠে গিয়ে কিস্তির টাকা আদায় না করে মহামারি করোনাভাইরাস রোধে প্রচারণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতা করায় ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি সনদপত্র পেয়েছে ব্র্যাক।
তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ১০ হাজার ১০১ জনকে সচেতনতামূলক লিফলেট, ১০ হাজার ৭৭৭ জনকে মোবাইলের মাধ্যমে ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া, মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রচার এবং এক হাজার ২০৮ জন সদস্যের মাঝে বিকাশের মাধ্যমে সঞ্চয় ফেরত বাবদ ২৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
ব্র্যাকের কাছ তেকে ১২ মাসের কিস্তিতে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা সাবেরা আক্তার। তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে আমার ২০ হাজার টাকা করে কিস্তি দেওয়া লাগত। এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত কিস্তি দেওয়া লাগেনি। করোনাকালে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভীষণ খুশি হয়েছি। এই সংকটকালে চাপমুক্ত থাকতে পারছি। তবে, পরে হলেও যেহেতু দিতে হবে, তাই অল্প করে টাকা জমাচ্ছি।’
সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিনুল হক পাভেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ব্র্যাকের কিস্তি আদায় স্থগিত রাখার বিষয়টি আমার অঞ্চলের গ্রাহকদের কাছে থেকে জেনেছি। এই সংকটকালে তাদের এমন উদ্যোগের ব্যাপারটি জেনে খুশি হয়েছি। এতে মানুষজন উপকৃত হচ্ছে।’
Comments