রানীশংকৈলে আরও দুই শতাধিক বন্যার্ত পরিবার আশ্রয় নিলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

ছবি: কামরুল ইসলাম রুবাইয়াত

ঠাকুরগাঁওয়ে গত বুধবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন করে আরও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে জেলার রানীশংকৈলে কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।

আজ শুক্রবার রানীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে কুলিক নদী সংলগ্ন শ্মশানপাড়া, আমজুয়ান, দোশিয়া, ভাটাপুড়া, মমিনপাড়া ও মহালবাড়ি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি জলাবদ্ধ  হয়ে পড়েছে। ঘরে পানি ঢোকায় সেসব পরিবারের সদস্যরা উপজেলার রানীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ, রানীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও দি সানরাইজ কিন্ডারগার্টেনে আশ্রয় নিয়েছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আযম মুন্না দ্য ডেইলি স্টারকে মুঠোফোনে বলেন, ‘উপজেলার যেসব বাড়িতে পানি উঠেছে সেসব পরিবারের মানুষদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে।’

অতিবৃষ্টিতে খেত ডুবে যাওয়ায় ফসলহানীর আশঙ্কা করছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ‘উপজেলায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই দুইদিনে যথাক্রমে ১৩০ মিমি ও ৯০ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নিম্নাঞ্চলের অনেক ফসলের খেতে পানি জমে গেছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আমন বীজতলা, ভুট্টা ও শাকসবজির খেতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।’

তিন-চার দিন বৃষ্টি না হলে খেত থেকে পানি সরার সুযোগ পাবে, সেক্ষেত্রে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন বীজতলায় বীজ বপন করা হয়েছে। এক হাজার হেক্টর জমিতে ভূট্টা ও ৩০০ হেক্টর জমিতে সবজি আছে।’

উপজেলার শ্মশানপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমির ভুট্টা খেত পানিতে ডুবে গেছে। শেষ মুহূর্তে এ ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসল পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছি।’

ভাটাপুড়া গ্রামের তৈয়ব আলী বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমির পাকা বোরো ধান সম্পূর্ণভাবে পানিতে তলিয়ে গেছে। আমাকে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এতে আমি হতাশ হয়ে পড়েছি। আমার আমন বীজতলাও পানিতে ডুবে গেছে। পানি দ্রুত সরে না গেলে বীজতলাও নষ্ট হবে।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমরা বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বন্যার্ত পরিবারের সাহায্যার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) বলা হয়েছে। এসব পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে ১২ লাখ টাকা ইউএনওদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন:

ঠাকুরগাঁওয়ে ভারী বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

6h ago