৩ মাস বন্ধ রপ্তানি বাণিজ্য, ঘাটতি ২ হাজার কোটি টাকা
বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি বাণিজ্য চালু হলেও গত ৩ মাস ধরে রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ আছে। রপ্তানি বন্ধ থাকায় বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা। কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ীরা ভারতে স্থানীয় পর্যায়ে কয়েক দফা বৈঠক করলেও রপ্তানি বাণিজ্য সচল হয়নি।
আজ শনিবার বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব নুরুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্য পুরোদমে চললেও রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দুই হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের বড় বাজার ভারত। দেশে স্থলপথে যে রপ্তানি হয় তার ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। প্রতি বছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৯ হাজার মেট্রিক টন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত ২২ মার্চ থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত ৭ জুন এ পথে ভারতীয় পণ্যের আমদানি বাণিজ্য শুরু হলেও ভারতীয়রা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রেখেছে। ফলে, বেনাপোল বন্দর এলাকায় ডাম্পিং করা হয়েছে শতশত মেট্রিক টন রপ্তানি পণ্য।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্য বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।’
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ থেকে দুইশ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট, পাটের ব্যাগ, পাটের সুতা, নীটেড ফেব্রিকস, তৈরি পোশাক, চিংড়ি মাছ, সাদা মাছ, কাঁচা পাট, পাটের ব্যাগ, পাটের সুতা, বসুন্ধরা টিস্যু, সুপারি, ধানের কুড়া, কর্টন র্যাগস (বর্জ্য কাপড়), ব্যাটারি, জিংক পেট, সিরামিক টাইলস, সাবান, হাড়ের গুড়া, কাঁচা চামড়া, সম্পূর্ণ প্রস্তুত চামড়া, ওষুধ, ক্যামিকেল পণ্য, সিমেন্ট ও মেহগনি ফল ইত্যাদি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘ভারতে রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরুর জন্য জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে। খুব দ্রুত রপ্তানি প্রক্রিয়াও শুরু হবে। স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।’
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দ্রুত সময়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব বলে এই পথে রপ্তানি বেড়েছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে বেশি। ভারতের কাস্টমস ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে, আশা করা যায় দ্রুত বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি শুরু হবে।’
Comments