জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর উপহার, পিটুনিতে হাত ভেঙেছে কল্পনার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খুরশেদ আলমের ছেলের বিরুদ্ধে কল্পনা রাণী দাস নামে এক নারীকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
Kalpana_Rani_Bbaria.jpg
কল্পনা রাণী দাস। ছবি: স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খুরশেদ আলমের ছেলের বিরুদ্ধে কল্পনা রাণী দাস নামে এক নারীকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী আরও অভিযোগ করেন, খুরশেদ আলম প্রস্তাব দিয়েছিলেন পাঁচ শ টাকা দেওয়ার শর্তে রাজি থাকলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নগদ উপহারের তালিকায় কল্পনার নাম অন্তর্ভুক্ত করে দেবেন। গ্রামের অন্যান্যরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ উপহার হিসেবে আড়াই হাজার টাকা পেলেও কল্পনা রাণী টাকা পাননি। তারপরও খুরশেদ আলমের ছেলে টাকার দাবিতে তাকে মারধর করে।

মজলিশপুরের বাজার ঘেঁষে শ্মশানের পাশে ঘর তুলে স্বামী এবং দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন কল্পনা রাণী দাস। এক সময় মজলিশপুরের আটখলা গ্রামে বাড়ি ছিল বিমল দাসের। ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ করাতে না পারায় প্রভাবশালী মহাজন সেই বাড়ি দখল করে নেয়। পরিবার নিয়ে প্রথমে তার ঠাঁই হয় মজলিশপুরের একটি মন্দিরে। পরে শ্মশানের পাশে ঘর তুলে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন বিমল ও কল্পনা। বিমল মজলিশপুর বাজারের পাশেই তিতাস নদীতে নৌকায় যাত্রী পারাপার করেন।

কল্পনা রাণী দাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা শ্মশানের পাশে যেখানে থাকি সেই জায়গাটি ছয় নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। প্রধানমন্ত্রীর নগদ উপহার পেতে প্রথমে ওয়ার্ডের সদস্য আওয়াল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি সাড়া না দেওয়ায় চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খুরশেদ আলমের কাছে যাই। আড়াই হাজার টাকা থেকে পাঁচ শ টাকা দিতে হবে— এমন শর্তে তিনি উপহারের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে দেবে বলে আশ্বাস দেন। আমার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও রাখেন। কয়েকদিন পরে জানান, তালিকায় নাম উঠে গেছে।’

‘বুধবার রাতে খুরশেদ আমাকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠান। আমিরপাড়ায় তার বাড়িতে যাওয়ার পরে তিনি পাঁচ শ টাকা দাবি করেন। টাকা পাইনি বলায় খুরশেদের ছেলে খায়েশ মিয়া লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। আমার ডান হাত ভেঙে গেছে। কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে। আমি ইউএনও অফিসে অভিযোগ করেছি।’— বলেন কল্পনা।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন ভাঙ্গা হাতের চিকিৎসা করানোই আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের অর্ধেক সময় আমার স্বামী বেকার থাকে। আমি কাজ করতে না পারলে কীভাবে সংসার চলবে!’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভিকটিম ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছে। যেহেতু ঘটনাটি মোবাইল কোর্টের মধ্যে পড়ে না, সে জন্য আমি নিজে ঘটনাটি তদন্তের ব্যবস্থা নিয়েছি। সদর থানার একজন উপপরিদর্শক তদন্ত করছেন।’

যোগাযোগ করা হলে উপপরিদর্শক শফিক বাবু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছি। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি কল্পনা রাণীকে মারধর করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

18m ago