তিস্তা গর্ভে বিলীন বসতভিটা, আবাদি জমি

Teesta erosion
লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা গ্রামে তিস্তার ভাঙন। ছবি: স্টার

চোখের সামনেই তিস্তা নদীর গর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা, বেঁচে থাকার অবলম্বন আবাদি জমি ও ফলের বাগান।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তার ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে রয়েছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা গ্রামের মানুষ।

নদী ভাঙ্গনের শিকার চর গোকুন্ডা গ্রামের আনিস আলী (৫০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রামের ২০টি বসতভিটা তিস্তার উদরে চলে গেছে। গত এক সপ্তাহে গেছে অন্তত ৫০টি বসতভিটা।’

‘এসব পরিবারের ৩০০ বিঘার বেশি আবাদি জমিও চলে গেছে’ উল্লেখ করে তিনি তিস্তার ভাঙন অব্যাহত আছে বলেও জানান।

চোখের পানি মুছতে মুছতে আম্বিয়া খাতুন (৫৬) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখন তারা নিঃস্ব ভূমিহীন। দুদিন আগেও সবকিছু ছিল। তিস্তার উদরে সব চলে গেছে। এখন থাকার জায়গাটুকুও নেই।’

পরিবারের সবাইকে নিয়ে আপাতত অন্যের জমিতে উঠেছেন বলেও জানান তিনি।

একই গ্রামের কৃষক আছিম উদ্দিন (৬৭) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বসতভিটা, বেঁচে থাকার অবলম্বন আবাদি জমি ও ফলের বাগান হারিয়ে নির্বাক হয়েছেন গ্রামের কয়েকশ মানুষ। চোখের সামনে সবকিছু হারাতে দেখতে নিদারুণ কষ্টে আছেন তারা।’

কৃষক নায়েব আলী (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিস্তার ভাঙন অব্যাহত থাকায় গ্রামের অন্যরা ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। গাছপালা কেটে বিক্রি করছেন পানির দরে। আশ্রয় নিচ্ছেন অন্যের জমিতে, সরকারি রাস্তায়। থাকছেন খোলা আকাশের নিচে।’

নদী ভাঙা কয়েকজনকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া একই গ্রামের শাহিন মন্ডল (৪৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুদিন আগেও এদের নিজেদের বসতভিটা ছিল, আবাদি জমি ও ফলের বাগান ছিল। সাধারণভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল। কিন্তু, এখন কিছুই নেই। এখন তারা নিঃস্ব-ভূমিহীন। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকছেন অনাহারে অর্ধাহারে।’

শুষ্ক মৌসুমে একটি প্রভাবশালী চক্র ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে তিস্তা থেকে বালু উত্তোলন করায় চর গোকুন্ডা গ্রামে নদী ভাঙন ভয়াবহ হয়েছে বলে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর অভিযোগ।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভাঙন কবলিত চর গোকুন্ডা গ্রাম পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রাথমিকভাবে ভাঙন ঠেকাতে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অনুমতি পেলে কাজ শুরু করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

First day of tariff talks ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

2h ago