করোনার ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার অভিযান দেখতে উৎসুক জনতা

উদ্ধারকর্মীরা যখন ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে মরদেহ উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলেন, তখন উৎসুক জনতা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোনো ধরনের মাস্ক ও সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই ভিড় জমায় নদীর পাড়ে ও মাঝে।
ভিড় করে থাকা এই জনতার বেশিরভাগ শুধুই দর্শক। করোনার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তাদের একটি বড় অংশের মুখেই ছিল না মাস্ক। তাদের উপস্থিতি ব্যাঘাত ঘটিয়েছে উদ্ধার কাজে। ছবি: স্টার

উদ্ধারকর্মীরা যখন ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে মরদেহ উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলেন, তখন উৎসুক জনতা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোনো ধরনের মাস্ক ও সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই ভিড় জমায় নদীর পাড়ে ও মাঝে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময় দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ছোট নৌকা ভাড়া করে দুর্ঘটনাস্থলের চারপাশে যারা ঘোরাঘুরি করছেন তাদের বেশিরভাগেরই মুখে ছিল না কোনো মাস্ক।

তাদের জমায়েতের কারণে উদ্ধার অভিযানও বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ কর্মকর্তাদের লাউডস্পিকারে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা পাশে সরে যান, আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের নৌকার নিচে আমাদের ডুবুরিরা কাজ করছেন।’

মিটফোর্ড থেকে নৌকা ভাড়া করে উদ্ধার অভিযান দেখতে আসা ফলের দোকানের কর্মচারী সুজন মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। কেন এখানে ভিড় করেছেন জানতে চাইলে হেসে জবাব দেন, ‘এখানে কি হয়েছে তা দেখতে এসেছি।’

মাস্ক কেন পড়েননি? এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন বলেন, ‘ভুলে মাস্ক দোকানে রেখে এসেছি। তাড়াহুড়া করে আসার সময় আনতে মনে ছিল না।’

সুজনের সঙ্গে নৌকায় আরও ছয় থেকে সাতজন ছিলেন। তাদের একজন হঠাৎ বললেন, ‘আপনা সমস্যা কি ভাই? আপনি আপনার কাজ করেন।’

বিশাল জনসমাগমের কারণে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডিউটি পুলিশকে দেখা গেল লাঠি দিয়ে ভিড় সরাতে। যাতে উদ্ধার কাজে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।

সদরঘাট নৌ-পুলিশ অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা প্রথমে তাদের প্রিয়জনদের খোঁজে নদীর মাঝখানে জড়ো হতে শুরু করেন। তাদের সঙ্গে, কিছু অতি উৎসাহী মানুষও উদ্ধার অভিযানের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার জন্য নৌকো ভাড়া করে জড়ো হন।’

‘আমরা তিনটি নৌকো নিয়ে অঞ্চলটি পেট্রোল করেছি এবং উৎসুকদের দূরে রাখার চেষ্টা করেছি যাতে উদ্ধারকারীরা কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হয়ে কাজ করতে পারেন। আমাদের প্রচেষ্টার কারণে উদ্ধার অভিযানে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি,’ যোগ করেন ওসি রেজাউল।

তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করায় এই এলাকায় ব্যাপক আকারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নাজির আহমেদ বলেন, ‘এলাকায় যেভাবে মানুষ জড়ো হয়েছিল তাতে মনে হয় দেশে মহামারি পরিস্থিতি নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ তাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে খুবই কম যত্নবান। যদি ওই অঞ্চলে অল্প পরিমাণেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে থাকে তবে তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago