ট্রাম্পের ফোনালাপ, আতঙ্ক হোয়াইট হাউজে

কোনো এক বিশ্বনেতার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেলিফোনে খুবই গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলবেন— এমন ঘটনা যখনই ঘটে তখনই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে হোয়াইট হাউজ।
Donald Trump
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এপি ফাইল ফটো

কোনো এক বিশ্বনেতার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টেলিফোনে খুবই গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলবেন— এমন ঘটনা যখনই ঘটে তখনই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে হোয়াইট হাউজ।

গতকাল সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউজ ও দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয়, আমেরিকার বন্ধু দেশগুলোর সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে টেলিফোনে অত্যাধিক গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলার সময় খেই হারিয়ে ফেলে ট্রাম্প। এমনকী, তিনি অবমাননাকর আচরণও করেন।

ট্রাম্পের সাবেক কর্মকর্তারা, যেমন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার ও জন বোল্টন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন, হোয়াইট হাউজ চিফ অব স্টাফ জন কেলি ও অন্যান্য শীর্ষ গোয়েন্দারা প্রেসিডেন্টের এমন আচরণকে ‘ভ্রমাত্মক’ বা ‘ভ্রান্তিমূলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

গোয়েন্দারা গণমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, কোনো বিশ্বনেতার সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প দক্ষতা দেখিয়েছেন এমন নজির খুব একটা দেখা যায় না।

শুধু তাই নয়, যে কোনো বিদেশির সঙ্গে কথা বলার সময় দেশের স্বার্থ তুলে না ধরে ট্রাম্প এমনসব হেঁয়ালি আচরণ করেন বা হাস্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন যা দেশের স্বার্থ তুলে ধরা তো দূরের কথা পুরো দেশকেই তিনি হাসিরপাত্র বানিয়ে ফেলেন।

এর ফলে কোনো কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব হয় না বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ও শীর্ষ গোয়েন্দারা।

উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, গত মার্চ মাসেই ট্রাম্পকে জানানো হয়েছে আফগানিস্তানে অবস্থানরত আমেরিকান সৈন্যদের হত্যা করতে রাশিয়া সে দেশের তালেবানদের বিভিন্নভাবে সহায়তা দিচ্ছে। এটি জানার পরও ট্রাম্প কোনো ব্যবস্থাই নিলেন না।

পুতিনের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তার আকাঙ্খার কথা বললেন। কিন্তু, তালেবানদের রুশ সহায়তা নিয়ে ট্রাম্প কোনো কিছুই বললেন না।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় ট্রাম্প এমনভাবে তর্জন-গর্জন করেন যার ফলে কাজের কথাটাই হয় না। এমন সময় ছিল যখন এরদোয়ান সপ্তাহে অন্তত দুই বার ট্রাম্পকে ফোন দিতেন।

শুধু পুতিন বা এরদোয়ান নন, ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র সঙ্গেও ট্রাম্প খারাপ আচরণ করেছিলেন। জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলকে ট্রাম্প বলেছেন ‘স্টুপিড’।

অথচ, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও উত্তর কোরিয়ার নেতাকে ট্রাম্পের আগের প্রেসিডেন্টরা ‘মূর্খ’ মনে করলেও ট্রাম্পের কাছে তারা ‘মহান’।

সিএনএন এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের ফোনালাপ নিয়ে সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন তার ‘দ্য রুম হোয়ার ইট হ্যাপেন্ড’ বইয়ে অনেক কিছুই লিখেছেন। কিন্তু, এর অনেক আগেই বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ নিয়ে সিএনএন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সিএনএন এ গতকালকের প্রতিবেদনটি গত চার মাস ধরে তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমটি এমন সব ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে তাদের কেউ কেউ ট্রাম্পের ফোনালাপের সময় উপস্থিত ছিলেন, কারো হাতে সেই ফোনালাপের লিখিত বা সারাংশ রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago