সেতিয়েনের অধীনেই প্রথমবার দেখা মিলছে মেসির এমন রূপের

ছবি: এএফপি

আর একটি গোল হলেই বিরল এক মাইলফলক গড়বেন লিওনেল মেসি। নাম লেখাবেন ৭০০ গোলের ক্লাবে। কিন্তু এমন কীর্তির সামনে এসে টানা তিনটি ম্যাচে গোলশূন্য থেকেছেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। তাতে গুঞ্জন উঠেছে অনেক, তাহলে হয়তো শেষ সময়ের কাছে পৌঁছে গেছেন মেসি। নতুন বার্সা কোচ কিকে সেতিয়েনের অধীনে তার পরিসংখ্যান অন্তত তা-ই বলে! ১৬ ম্যাচে মাত্র ১০ গোল। গড়ে ০.৬৩ গোল। পরিণত হওয়ার পর ম্যাচপ্রতি এত কম গোল ছিল আর কোনো কোচের অধীনে? চলুন দেখে নেওয়া যাক মূল ঘটনা।

ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের অধীনে ২০০৪ সালে সর্বপ্রথম বার্সেলোনার সিনিয়র দলে সুযোগ পান মেসি। সেই থেকে শুরু। এখন পর্যন্ত, এ ক্লাবের হয়ে মোট আট জন কোচের অধীনে খেলেছেন আর্জেন্টাইন তারকা। এর মধ্যেই ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলের মালিক হয়েছেন। করেছেন সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টও। তবে বর্তমান কোচ সেতিয়েন ছাড়া বাকি সব কোচের অধীনেই তার অ্যাসিস্টের সংখ্যার চেয়ে গোল সংখ্যা ছিল প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি। কেবল সেতিয়েনের অধীনেই ব্যতিক্রম। গোলের চেয়ে অ্যাসিস্টের সংখাই বেশি। অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ে গোল করার চেয়ে গোল করানোর দিকে মনযোগী বার্সা ফরোয়ার্ড।

আর হবেই না কেন? কদিন আগেই ৩৩তম জন্মদিন পালন করেছেন মেসি। ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ারটা শেষের দিকেই। এ বয়সে অনেক তারকা খেলোয়াড়ই বুটজোড়া তুলে রেখেছেন। সেখানে মেসি খেলে যাচ্ছেন অনবদ্যভাবেই। বয়সের কারণে কিছুটা হলেও গতি মন্থর হয়েছে তার। যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আক্রমণভাগের একটু পেছনের দিকেই খেলে থাকেন মেসি। তাছাড়া জাভি-ইনিয়েস্তারা না থাকায় ক্লাবের মূল প্লে-মেকারের কাজটা করতে হয় এখন তাকেই। তাই একটু নিচের দিকে খেলে গোল বানিয়ে দেওয়াতে মনোযোগ দিতে হচ্ছে রেকর্ড ছয়বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী তারকাকে।

রাইকার্ডের অধীনে মোট ১১০টি ম্যাচ খেলে ৪২টি গোল করেছেন মেসি। তখন তার অ্যাসিস্ট সংখ্যা ছিল ২৯টি। একমাত্র তার অধীনেই গোলের সংখ্যা অ্যাসিস্টের সংখ্যার দেড় গুণের মতো ছিল। গড়ে গোল সংখ্যাও ছিল কম। ম্যাচ প্রতি ০.৩৮। কারণ হলো, ১১০টি ম্যাচ খেললেও মাঠে মেসি সময় পেয়েছেন ৭,৩৩৮ মিনিট। অর্থাৎ খুব কম ম্যাচেই পুরো খেলার সুযোগ হয়েছিল। সবেমাত্র মূল দলে উঠে আসায় বদলি খেলোয়াড় হিসেবেই বেশি খেলতে হয়েছে তাকে।

তবে রাইকার্ডের অধীনে নিজেকে প্রমাণ করা মেসিকে এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি। এরপর থেকেই গোল করায় আরও বেশি পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনি। পেপ গার্দিওলার অধীনে ২১৯টি ম্যাচ খেলে ২১১টি গোল ও ৯১টি অ্যাসিস্ট করেন মেসি। গার্দিওলা যাওয়ার পর ৮টি ম্যাচ জর্দি রাউরার অধীনে খেলেন মেসি। সেখানে ১২টি গোলের পাশাপাশি ২টি গোলে সহায়তা করেন।

গোলের বিচারে, সাবেক কোচ টিটো ভিলানোভার অধীনে সবচেয়ে সফল ছিলেন মেসি। এ সময়ে ৪২টি ম্যাচ খেলে ৪৮টি গোল দিয়েছেন তিনি। অ্যাসিস্ট সংখ্যা অবশ্য এ সময়ে কম ছিল। মাত্র ৩টি। এরপর জেরার্দো মার্তিনোর অধীনে ৪৬টি ম্যাচ খেলে ৪১টি গোল ও ১৫টি অ্যাসিস্ট করেন এ আর্জেন্টাইন। বার্সার অন্যতম সফল কোচ লুইস এনরিকের অধীনে ১৫৮ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন ১৫৩টি। পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেন ৭০টি।

আর গেল জানুয়ারিতে ছাঁটাই হওয়া আর্নেস্তো ভালভার্দের সময়েও সফল ছিলেন মেসি। ১২৪ ম্যাচে গোল করেছেন ১১২টি। সঙ্গে ২৪টি অ্যাসিস্ট রয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে সেতিয়েনের যুগ। এখন পর্যন্ত ১৬টি ম্যাচ খেলেছেন তার অধীনে। সেখানে গোল সংখ্যা মাত্র ১০টি। অন্যদিকে অ্যাসিস্ট সংখ্যা ১৩টি। রাইকার্ডের সময়ের কথা বিবেচনায় না আনলে, এ সময়েই গোলের গড় সবচেয়ে কম মেসির। কারণ, এখন মেসি মাঠে নামেন যে ভিন্ন রূপে!

সবমিলিয়ে বার্সেলোনার জার্সি গায়ে মোট ৭২৩টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। খেলেছেন ৬৯ হাজার ৮৬২ মিনিট। এর মধ্যে গোল দিয়েছেন ৬২৯টি। ম্যাচপ্রতি ০.৮১টি। অ্যাসিস্ট সংখ্যা ২৮১টি। এর মধ্যে লা লিগাতে ৪৭৯ ম্যাচ খেলে ৪৪০টি গোল ও ২৫১টি অ্যাসিস্ট করেছেন এ তারকা। বাকিগুলো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা দেল রে ও অন্যান্য প্রতিযোগিতায়।

Comments

The Daily Star  | English

Tanvir takes five as Tigers clinch 2nd Sri Lanka ODI

Bangladesh captain Mehidy Hasan Miraz has won the toss and opted to bat first in the second ODI against Sri Lanka, looking to keep the three-match series alive with a win at the R Premadasa Stadium today. 

14h ago