হত্যা মামলায় পিরোজপুরে ৩ অ্যাম্বুলেন্স চালক পলাতক, ভোগান্তিতে রোগী
পিরোজপুরে দুটি পৃথক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার পর জেলা হাসপাতাল এবং মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের তিন অ্যাম্বুলেন্স চালকের সবাই পলাতক। আজ মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
পলাতক অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা হলেন, পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের মোতালেব শেখ ও তার ছেলে সুমন শেখ এবং পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের কবির হোসেন।
এদিকে অ্যাম্বুলেন্স চালক না থাকায় গুরুতর অসুস্থ রোগী নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্বজনেরা।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী জানান, জেলা হাসপাতালের দুজন অ্যাম্বুলেন্স চালক হত্যা মামলার আসামি, বিষয়টি বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স চালকের ব্যবস্থা করা হবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত রোববার (২৮ জুন) পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাকুনিয়ারি গ্রামে প্রতিবেশী এনায়েত মোল্লাকে (৬০) কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মোতালেব শেখের নেতৃত্বাধীন ১৪-১৫ জনের একটি দল। গুরুতর জখম এনায়েতকে উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। আজ সকালে খুলনা মেডিকেলে মারা যান এনায়েত।
হামলার ঘটনায় গতকাল এনায়েতের ছেলে আল আমীন বাদী হয়ে মোতালেব এবং তার দুই ছেলেসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেন।
তারপর থেকেই পলাতক রয়েছেন মোতালেব ও তার ছেলে সুমন। যদিও ওই মামলায় সুমনের নাম উল্লেখ নেই।
এ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে বলে জানিয়েছেন পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বাদল। তিনি বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার পিরোজপুর সদর থানায় হওয়া আরেকটি হত্যা মামলায় পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক কবির হোসেন পলাতক রয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৪ জুন পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র তুষার শেখ (১৪) এর পা ভেঙে যাওয়ার পর স্বজনরা তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। অভিযোগ আছে খুলনা যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্স চালক কবির তাদের ভুয়া চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানেই অপারেশনের পর রাতে মারা যান তুষার।
এ ঘটনায় তুষারের বাবা সোহাগ শেখ বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার হলেও পলাতক আছেন কবির হোসেনসহ অন্য আসামিরা।
Comments