ত্রাণের আশায় সুনামগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষ
লোকজনের চলাচল তেমন একটা নেই। কিন্তু, কিছু কিছু স্থানে জটলা দেখা যায়। সেই জটলা দিনমজুর অসহায় দরিদ্র মানুষের। এলাকায় কোনো নৌকা আসলেই একটু বাঁচার আকুতি নিয়ে ত্রাণের আশায় দাঁড়িয়ে যান এসব মানুষ। এমন দৃশ্য দেখা গেল সুনামগঞ্জের বন্যাপীড়িত এলাকায়।
খাদ্যের সন্ধানে তারা ভিড় করছেন হাট-বাজারে ও রাস্তায়। খাদ্য সংকটে চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা।
তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুরের বাসিন্দা মাহফুজ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোন নৌকা আসলে তা দেখা মাত্রই গরিব মানুষেরা ছুটে আসেন। পরে একসময় দেখা গেল চাল বিতরণ করা হচ্ছে। চালের জন্য কয়েকশ মানুষের কাড়াকাড়ি। মুহূর্তের মধ্যে বিতরণ শেষ। অথচ দুই তৃতীয়াংশ মানুষই খালি হাতে ফিরছেন।’
ত্রাণের আশায় জেলা শহরের মল্লিকপুর এলাকার শ্রমজীবী নারী হোসনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা কাজ করে দৈনিক যে মজুরি পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। বন্যার কারণে কয়েকদিন থেকে কাজ করতে পারতেছি না। ঘরে খাবার নাই। তাই বাজারে বের হয়েছি যদি কেউ চাল-ডাল দেয়।’
শহরের রিকশাচালক সাদেক মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শহরে লোকজন তেমন নেই। সব দিকে বন্যার পানি। ঘর থেকে কেউ তেমন বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছে তারা নিম্নআয়ের মানুষ। রিকশায় চড়ে না। খুব কষ্টে আছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।’
‘গত ২৪ ঘণ্টায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে,’ উল্লেখ করে আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে উজানে বৃষ্টি কম হওয়ায় সীমান্ত নদী জাদুকাটার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বন্যাদুর্গতদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলার ১১ উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনসহ আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৭টি। বন্যা কবলিত এলাকায় ৪১০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
‘উপজেলাগুলোয় ৪ হাজার ৭৫২ পরিবারের জন্য শিশু খাদ্য দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও দেওয়া হবে,’ যোগ করেন তিনি।
Comments