অপহরণের সাত ঘণ্টা পর ব্যবসায়ী উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৮
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার এগার মাইল মুজাবর্ণী গ্রাম থেকে অপহৃত এক ভুট্টা ব্যবসায়ীকে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপহরণের সাত ঘণ্টা পর আজ শনিবার ভোররাত ২টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত ব্যবসায়ী জুয়েল রানা (২৮) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌধুরীহাট গ্রামের নেছার আলীর ছেলে।
এ সময় পুলিশ আন্তঃজেলা অপহরণকারী চক্রের আট সদস্যকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হল- জামালপুরের বীরপাকেরদহ গ্রামের আশরাফুল ইসলাম আরিফ (২৭), নিশ্চিন্তপুরের আলাল ঊদ্দীন (৩৫), কুড়িগ্রামের নেওয়াশি গ্রামের হুমায়ুন কবির (৪৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিদ্যাকোটের দেলোয়ার হোসেন (৩২), মনিঅন্ধ গ্রামের মো. আল-আমিন (৩৫), নোয়াখালীর চতরপাইয়া গ্রামের মো. সোহাগ (৩২), বগুড়ার পিরব গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৪৫) এবং রাজশাহীর দরগাপাড়ার গাড়িচালক সালাউদ্দিন (৩৯)।
ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, জুয়েল রানা গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল যোগে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়ক হয়ে পঞ্চগড়ের দিকে যাচ্ছিলেন বিভিন্ন ভুট্টা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তার পাওনা আদায়ের জন্য। সন্ধ্যা সাতটার দিকে মুজাবর্ণী গ্রামে একটি জ্বালানী স্টেশনের সামনে পৌঁছালে সাদা মাইক্রোবাসে আসা অপরাধীদের একটি দল জুয়েল রানার মোটরসাইকেলটির গতিরোধ করে এবং তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
স্থানীয় এক পানের দোকানদার বিষয়টি লক্ষ্য করে তাত্ক্ষণিকভাবে ওসি তানভিরুলকে ফোন করেন এবং ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি গাড়ির রঙ এবং নম্বর প্লেটের শেষ তিন নম্বর ওসিকে জানান।
খবর পেয়েই ওসি অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেন।
অপহরণের এক ঘণ্টা পরেই অপহরণকারীরা জুয়েলের মোবাইলের মাধ্যমে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। তারা মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে।
এরপর জুয়েলের মোবাইল ফোন নম্বর ধরেই ওসি তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে অবস্থানটি সিরাজগঞ্জে চিহ্নিত হওয়ার বঙ্গবন্ধু সেতু (পশ্চিম) থানার ওসিকে এ তথ্য জানান তিনি।
এর ১০ মিনিটের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু (পশ্চিম) থানার পুলিশ চেকপোস্টে মাইক্রোবাসটি থামিয়ে জুয়েলকে উদ্ধার করে এবং গাড়িচালকসহ আট অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে।
অপহরণকারীদের ব্যাপক মারধরে জুয়েল অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গতকাল রাত বারোটার দিকে জুয়েলের মা অঞ্জুয়ারা বেগম অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে ঠাকুরগাঁও থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছে ওসি তানভিরুল ইসলাম।
তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আঞ্জুয়ারা বেগম জানান, পুলিশের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই আমার ছেলেকে উদ্ধার করা গেছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সিরাজগঞ্জ থেকে ঠাকুরগাঁও থানায় অপরাধীদের ফিরিয়ে আনছেন।
Comments