কষ্টে আছেন ব্রহ্মপুত্রপাড়ের বানভাসিরা

চরম কষ্টে-দুশ্চিন্তায় নৌকার ওপর বসেছিলেন জমিলা বেওয়া (৬০)। তার এ দুশ্চিন্তা ছিল ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার দুশ্চিন্তা, অনাহারে থাকার দুশ্চিন্তা।
Kurigram flood victim
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চর শিবেরপাছি থেকে জমিলা বেওয়া (৬০) নৌকায় মুলভুখণ্ডে এসেছিলেন ত্রাণের আশায়। ফিরে যান খালি হাতে। ৪ জুলাই ২০২০। ছবি: এস দিলীপ রায়

চরম কষ্টে-দুশ্চিন্তায় নৌকার ওপর বসেছিলেন জমিলা বেওয়া (৬০)। তার এ দুশ্চিন্তা ছিল ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার দুশ্চিন্তা, অনাহারে থাকার দুশ্চিন্তা।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চর শিবেরপাছি থেকে জমিলা নৌকায় চড়ে মুলভুখণ্ডে এসেছিলেন ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার জন্য। কিন্তু, ভাগ্যে জোটেনি কিছু। চোখে-মুখে বেদনার ছাপ।

গতকাল শনিবার সকাল আটটায় একমুঠো পান্তাভাত খেয়ে নৌকায় চড়ে আসেন যাত্রাপুর ঘাটে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে আড়াই কিলোমিটার দুরে যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদে। আশা ছিল ত্রাণের চাল, আলু পাবেন। কিন্তু, সেদিন ত্রাণ দেওয়া হয়নি। দিনভর যাত্রাপুর এলাকায় অনাহারে কাটিয়ে বিকাল সাড়ে ৫টায় ঘাটে গিয়ে নৌকায় চড়ে বসেছিলেন বাড়ি ফেরার জন্য।

ওই চরের মৃত আব্দুল জব্বারের ন্ত্রী জমিলা বেওয়া আস্তে আস্তে শুকনো গলায় দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন, ‘চারদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি, বাড়িতেও পানি আর পানি। ঘরে খাবার নাই। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলাম ত্রাণের আশায়। বিশ টাকা ছিল হাতে। নৌকা ভাড়ায় খরচ হয়ে গেছে। হাতে কোন টাকা নাই। সারা দিন কিছু খেতে পারি নাই।’

তিনি জানান, তারা চরের বানভাসি মানুষদের একবেলা খাবার জুটলেও আর একবেলা উপোস থাকতে হচ্ছে। বানের পানিতে দুর্গম চরে বাস করতে হচ্ছে।

জমিলা বেওয়ার মতো এখন ব্রহ্মপুত্রের দুর্গম চরের অধিকাংশ মানুষের জীবন। আয়-রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন তারা। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মূল ভূখণ্ডে আসতে হয় নৌকায়। আসার খরচও যোগাতে পারছেন না অনেক চরবাসী।

চর শিবেরপাছির মতো চর কালীআলগা, চর রোলাকাতা, ঝুমকারচর, আলোরচর, চর ভগবতিপুর ও মশালেরচর ঘুরে ঘরে ঘরে এ দৃশ্যই দেখা গেছে। খাবারের কষ্টে রয়েছেন দুর্গম চরের বানভাসিরা।

শিবেরপাছি চরের বানভাসি জহুরুল ইসলাম (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুর্গম চরে বাস করায় দুর্যোগকালে আমাদের কাছে কেউ আসতে চান না। সরকারি ত্রাণ সহায়তাও পাই না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব লোকজনদের সহায়তা দেন। এ কারণে আমাদের খাদ্য সঙ্কট আরও তীব্র হয়ে উঠে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শামসুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যে পরিমাণ সরকারি ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয় তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ রয়েছেন দুর্গম চরে। সবাইকে সরকারি ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না।’

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

6h ago