সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ নিয়ে বিরোধ

নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা-হামলার অভিযোগ

সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ ও বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় এক প্রবাসীর বসতঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানো ও প্রবাসীর ছোট মেয়েকে (১৮) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ ও বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় এক প্রবাসীর বসতঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানো ও প্রবাসীর ছোট মেয়েকে (১৮) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

গত ২ জুলাই রাত ১১টায় উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজারামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  এ ঘটনায় পাঁচ নারীসহ ছয় জন আহত হয়েছেন।

অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম জোবায়ের হোসেন (৩৮)। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক।

এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে হামলার শিকার এক নারী বাদী হয়ে আট জনকে আসামি করে সেনবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সেনবাগ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজারামপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী বেল্লাল হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়ের হেসেনের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। প্রবাসীর স্ত্রী রৌশন আরা বেগম গত ২ জুলাই তার বসত ঘরের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন। এ ঘটনায় ওই দিন রাত আনুমানিক ১০টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়ের ১০-১২ জন লোক নিয়ে ওই প্রবাসীর বসতঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। একইসঙ্গে যেখানে যারা ছিলেন, তাদেরকে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে শুরু করেন।

এক পর্যায়ে প্রবাসীর ছোট মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীকে (১৮) তুলে একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা চালায় জোবায়ের। সে সময় ভুক্তভোগীর চিৎকারে তার মা, বোন সবাই এগিয়ে গেলে জোবায়ের তাকে ছেড়ে দিলেও শারীরিকভাবে আহত করে। এই ঘটনায় পাঁচ নারীসহ ছয় জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ওই দিনই (২ জুলাই) রাত ৩টার দিকে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল দুপুরে তারা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে মামলার বাদী বলেন, ‘মামলার মূল আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়ের যে কোনো সময় আবার আমাদের ওপর হামলা চালাতে পারে। এ নিয়ে বর্তমানে আমরা শঙ্কায় রয়েছি।’

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা মো. জোবায়ের হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রবাসী বেল্লাল হোসেনের স্ত্রী বাড়ির চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়াল নির্মাণ করেছেন। এ নিয়ে বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি হয়। তবে, ওই প্রবাসীর ঘরে কোনো হামলা কিংবা তার মেয়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টার কোনো ঘটনার ব্যাপারে আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জোবায়ের হোসেন উগ্র স্বভাবের মানুষ। তাই তিনি এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

সেনবাগ থানার ওসি আব্দুল বাতেন মৃধা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও ওই প্রবাসীর মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে জোবায়ের হোসেনসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আসামিদের ধরতে অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু, তারা পলাতক রয়েছেন।’

আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus’ economic gambit paying off

Two months ago, as Professor Muhammad Yunus waded into Bangladesh’s unprecedented political turmoil, he inherited economic chaos by default.

6h ago